কুমিল্লায় ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে হুমকিসহ বাদির ঘরে ডাকাতি কায়দায় লুট

সদর দক্ষিণ প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে কালাম মিয়ার ঘরে সোমবার রাত ১০টার দিকে ডাকাতি কায়দায় বাদির ঘরে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা,স্বর্ণলংকার লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিন অনুসন্ধান কালে কালামের স্ত্রী হালিমা জানায়, সোমবার রাত আনুমানিক দশটার দিকে আমি এবং আমার স্বামী (কালাম) ঘুমাতে যাওয়ার আগ মূহুর্তে আমার স্বামী বাথরুমে ঢুকে আমি দরজা খুলে ঘরের বারান্দায় গ্রীল গেইটে তালা দিতে গেলে আমাদের ঘরের বাহিরে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা পাশর্^বর্তী বাড়ির ডাঃ আলী আশ্রাফ,তার ভাই মতিন,মতিনের মেয়ে তাহমিনা,তাদের বাগিনা মীর হোসেন,ইয়াকুবসহ আমার অপরিচিত ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের আরো তিনজন পুরুষ লোক আমাদেন ঘরে লুটপাটসহ ভাংচুর চালায়।

সোমবার রাতের ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে কালামের স্ত্রী হালিমা আরো জানায় প্রথমে আমার বারান্দায় তাহমিনা এবং মীর হোসেন ঢুকে আমাকে ওড়না দিয়ে তাহমিনা মুখ পেছিয়ে ধরে আর মীর হোসেন আমার গলায় ছুরি ধরে বলতে থাকে আওয়াজ দিলে প্রাণে মেরে ফেলবো বলে জিম্মি করে রাখে। তখন আমার স্বামী বাথরুমে ছিলেন আমার স্বামী যেন বাথরুম থেকে বাহির হতে না পারে ইয়াকুব বাথরুমের সিটকারী দরজার বাহির দিয়ে লাগিয়ে চেনি নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। তখন আমার অপরিচিত আরো তিনজন লোক আমার ঘরে ঢুকে ডাকাতের মতো আসবাবপএ ভাঙ্গতে থাকে এবং আলমারীর, সুকেছের তালা ভেঙে আমার ডয়ারে থাকা নগদ ১ লক্ষ একাওর হাজার টাকা,আটভরি স্বর্ণ নিয়ে যায় ও অনেক জিনিসপএ ভাংচুর করে,আর বলতে থাকে তুষারকে (ধর্ষক) তোরা অকারণে জেলে দিসোত, কয়েক দিনের মধ্যে মামলা না উঠালে পরের বার দুজনকে প্রাণে মেরে ফেলবো। এরপর পাশের বাড়ীর মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে বাহিরে দাড়িয়ে থাকা ডাঃ আলী আশ্রাফ বলতে থাকে কেউ মনে হয় আসতেছে তোরা বাহিরে চলে আয়,তখনো আমার স্বামী (কালাম) বাথরুমের ভিতর ছিল,তাকে তারা মেরে ফেলার ভয়ে সে তাদের সামনে আসেনি,তখন তারা বাথরুমের দরজা কুপিয়ে গালিগালাজ করে চলে যায়।

তারা ঘর থেকে চলে যাওয়ার পর,আমি এবং আমার স্বামী চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং মসজিদের মাইকে কে জানি ডাকাত আইছে বলে ঘোষণা দিলে পুরা গ্রামের মানুষ আমাদের বাড়িতে আসে। এই বিষয়ে কালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানায় আমিতো তাদের মারমুখী আওয়াজ শোনে তারা যতক্ষণ আমার ঘরে ছিল আমি আমার প্রাণের ভয়ে বাথরুম থেকে বাহির হয়নি। বাহির হয়ে দেখি তারা আমার ঘরের অনেক আসবাবপএ ভাংচুর করে আমার সুকেছের ডয়ারে থাকা একলক্ষ একাওর হাজার টাকা আমার স্ত্রীর ৮ ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায়। আমি বিষয়টি উপস্হিত আমার গ্রামের সকলকে জানাই।

গ্রামের সরদার ডাঃ মামুনসহ সকলে জানায় আগামী দিন সকালে সবাই বসে একটা সিদ্ধান্ত হবে বলে সবাই চলে যায়। কালাম আরো জানায় সবাই চলে গেলে রাতে হটাৎ চিৎকার শোনতে পাই আগুন আগুন, তখন দেখি আমার সন্ধ্যা রাতের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমাকে পাষানোর জন্য ডাঃ আলী আশ্রাফ ও তার ভাই মতিন মিলে তাদের একটি রান্না ঘরে তারা নিজেরাই আগুন লাগিয়ে দেয়।যখন আগুন আগুন বলে চিৎকার শুনি তখন দরজা খুলে দেখি আমার বাড়ীতে বিদ্যুৎ থাকলেও তাদের বাড়ীতে বিদ্যুৎ নেই,তাদের রান্না ঘরের পাশের রুমে গোয়াল ঘর ছিলো গরুরও কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং আগুন লাগার অল্প সময়ের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী ও হাজির। যা করা হয়েছে সব আমাকে ভিন্ন ভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়ার জন্য। কালাম আরো বলেন আমাকে দেখলে আমার মেয়ের হত্যাকারীর চাচা মতিন তার ভাতিজা তুষারের নামে মামলা তুলে নেওয়া জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সব সময় হুমকি দমকি দিতে থাকে। আমার মেয়ের হত্যাকারী বিচার চেয়ে আমি আমার এলাকাবাসীর সহযোগী তায় বিভিন্ন এলাকায় হত্যাকারীর ফাসিঁ চাই দিয়ে পোস্টার লাগালে মতিন এবং তার বাগিনা মীর হোসেন পোস্টার গুলা চিরে ফেলে। আমার মেয়ের হত্যাকারী তুষারের বাবা আলী আশ্রাফ সব সময়ে বলে যত টাকা যাক কোন মীমাংশায় যাবো না। আমার ছেলের কিছু হলে আমি কালামকে প্রয়োজনে ভিটা ছাড়া করবো। কোন ছাড় দেবো না।

কালাম সাংবাদিকদের জানায় আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীর সুষ্ঠু বিচার চাই,আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। উল্লেখ্য গত বছর ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষ্ণ নগর গ্রামের কালামের চার বছর বয়সী নাবিলা নামে মেয়েটি হারানো যায় একদিন পর ১৮ ডিসেম্বর ভোরে তার বাড়ীর আঙ্গিনায় নাবিলার নিথর মহদেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন কে বা কাহারা নাবিলার মৃত্যুর সাথে জড়িত তাৎক্ষনিক। জানা যায়নি ঘটনার স্থলে সদর দক্ষিণ থানার পুলিশ এসে তদন্ত করে অজ্ঞাত নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে কিছুদিন পর মামলাটি থানা থেকে কুমিল্লা ডিবিকে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকে কুমিল্লা ডিবি প্রশাসন মামলাটি নিয়ে মামলা রহস্য উদঘাটন করতে শুরু করে এরেই সূএ ধরে কালামের পাশের বাড়ীর ডাঃ আলী আশ্রাফের ছোট ছেলে মেহরাজ হোসেন তুষারকে ডিবি পুলিশ আটক করে এবং জিঙ্গাসাবাদ করলে তুষার চার বছরের নাবিলাকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা নিজেই ডিবি পুলিশের কাছে শিকার করে। বর্তমানে তুষার কুমিল্লা কারাগারে আছেন এবং এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে মামলাটির অগ্রগতি ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই মামলা অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে।

আরো পড়ুন