মুরাদনগরে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে উপজেলা আ’লীগের সভাপতির ‘শ্রদ্ধা নিবেদন’
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন আউয়াল জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে উঠে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করার ঘটনায় এলাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্ঠি হয়েছে।
শুক্রবার ২১শে ফেব্রুয়ারী শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে উপজেলা সদরে ডিআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবস্থিত শহীদ মিনারে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে তিনি জুতা পায়ে নিয়েই ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ দেন। জুতা পায়ে শহীদ মিনারে আ’লীগ নেতার ছবিটি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পগলে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার রাত বারোটা এক মিনিটে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবস্থিত শহীদ মিনারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এফসিএ সর্ব প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ, প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে শহীদ মিনারে আসেন সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন আউয়াল। এ সময় তিনি জুতা নিয়ে বীরদর্পে শহীদ মিনারে উঠে পড়েন এবং জুতা পায়ে রেখেই শহীদ বেদীতে ফুল দেন। এ সময় শহীদ মিনার এলাকায় তাকে নিয়ে সমালোচনাসহ বেশ হৈচৈয়ের সৃস্টি হয়। জুতা নিয়ে আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতির এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। তার এমন ধৃষ্টতার কারনে দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি উঠে আওয়ামীলীগ এবং অংগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এবিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ম. রুহুল আমীন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে অত্যান্ত মর্মাহত হয়েছি, আউয়াল নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে কিভাবে শহীদদের সাথে বেয়াদবি করে তা বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে তাকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ভিপি জাকির হোসেন বলেন, আউয়াল সাহেব একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সিনিয়র আওয়ামীলীগ নেতা, তিনি কিভাবে শহীদ বেদিতে জুতা নিয়ে প্রবেশ করে, তিনি এটা চরম অন্যায় করেছেন। এনিয়ে কথা বলার জন্য সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন আউয়ালকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, ফুল দিতে গিয়ে যদি কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠে থাকে তাহলে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।