দেবিদ্বারে যুবককে আটকে রেখে চেয়ারম্যানের মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
কুমিল্লার দেবিদ্বারে কর্মহীন ও হতদরিদ্র মানুষের জন্য ত্রাণ দাবি করায় ১০ নং গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এক কোরানে হাফেজ যুবককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মারধরের ঘটনা তদন্তে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু তাহেরকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের মাশিকারা গ্রামের কোরানে হাফেজ মোঃ আশেকে এলাহী ব্যক্তিগত ভাবে এলাকার ১১০ জন গরীব ও দু:স্থ্য মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে অভাবগ্রস্থ অনেকে তার নিকট ত্রাণের জন্য ছুটে আসেন। তখন তিনি কর্মহীন, অভাবগ্রস্থ ৫৯ জনের একটি তালিকা করে তাদের ত্রাণ দিতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম খাঁনকে অনুরোধ করেন। নিজ উদ্যোগে তালিকা করে ত্রাণ চাওয়ায় চেয়ারম্যান তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করার অভিযোগে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে চেয়ারম্যান ৪ গ্রাম পুলিশ দিয়ে ওই যুবককে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে আসে। সেখানে তাকে প্রায় ৪ঘন্টা আটকে রেখে অকথ্য গালাগাল ও তিন দফা মারধর করেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওইদিন বিকাল ৪ টার দিকে ওই যুবক ছাড়া পায়। এদিকে চেয়ারম্যান কর্তৃক যুবককে গালাগাল ও কক্ষে আটকে মারধোর করার ভিডিও এবং পরে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়ে ভুক্তভোগী আশেকে এলাহী লাইভে পুরো ঘটনার বর্ণনা করার কয়েকটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়লে, তা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।
ঘটনাটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হলে রোববার বিকালে দেবিদ্বার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু তাহেরকে প্রধান করে এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মাওলা ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ গোলাম রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান।
এদিকে আশেক এলাহী নামের ওই যুবক সোমবার সকালে এ প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে বলেন, ঘটনার পর থেকেই আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। হোসেন (হুসু) চৌকিদারের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট বানানোর অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চাই।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের জানান, আমরা তদন্ত কাজ শুরু করে দিয়েছি। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও গুলো পেয়েছি। খুব দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবো।