বুড়িচংয়ের কোরপাই-কাকিয়ারচর সড়কটির বেহাল দশা
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদ কোরপাই-কাকিয়ারচর সড়কটির ৩ কিলোমিটার অংশে বিগত দু’যুগেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ফলে বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তিতে এখানকার হাজার হাজার মানুষ। সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মানুষ পায়ে হেটেই চলাচল করছে। কেউ কেউ রিক্সা,ইজিবাইক বা সিএসজি অটোরিক্সা দিয়ে চলাচল করলেও ৩ কিলোমিটার সড়কটি পারাপারে গুনতে হয় ২/৩’শ টাকা। যা সাধারন মানুষের পক্ষে অসাধ্য। ফলে এখানকার মানুষ অনেকটা বাধ্য হয়েই পায়ে হেটে আসা-যাওয়া করছে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম কোরপাই, কাকিয়ারচর। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে গ্রাম দুটির অবস্থান। মহাসড়ক থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরের কোরপাই গ্রাম থেকে সোজা পশ্চিমে কাকিয়ারচর। এখানে বসবাস করে কমপক্ষে ৪ হাজারেরও বেশী মানুষ। কাকিয়ারচর গ্রামে রয়েছে কাকিয়ারচর সরকারী প্রাথমিক ও কাকিয়ারচর আদর্শ কারিগরী উচ্চ বিদ্যালয় নামের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় এক হাজারেরও বেশী। এছাড়াও রয়েছে ব্যবসায়ী,কর্মজীবি ও শ্রমজীবি অনেকেই। দুটি গ্রামের মানুষদের চলাচলের এই ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি অতিক্রিম করে লোকজন প্রতিনিয়তই যাতায়াত করতে হচ্ছে কর্মস্থল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
এর বাইরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ বা ব্যক্তিগত প্রয়োজন কিংবা চিকিৎসা সেবা নিতেও লোকজন সড়কটি অতিক্রম করে জেলা সদর বা গুরুত্বপূর্ণস্থানগুলোতে যাতায়াত করে। সরেজমিন গ্রামটি ঘুওে দেখা গেছে এতটাই অনুন্নত এলাকা যে, পুরো বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকাটি লোকজনদেও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক গ্রামবাসীর অভিযোগ রয়েছে সড়কটিতে বিগত দু’যুগে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অপেক্ষাকৃত নিম্নআয়ের মানুষদেও বসবাসের এই গ্রামের অধিকাংশই কৃষিকাজের সাথে জড়িত। শুস্ক মৌসুমে কিছুটা বিরম্বনা কম হলেও বর্ষায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠে। রাস্তাটি ব্যবহারের এতটাই অনুপযোগী যে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি অতিক্রম করতে ২/৩’শ টাকা দাবী রিক্সা বা ইজিবাইক চালকদের। যা নিম্ন আয়ের মানুষদের পক্ষে একেবারেই অসহনীয়। এদিকে সড়কটি অনুপযোগী থাকায় অসুস্থ রোগী কিংবা বৃদ্ধ নারী-পুরুষ,শিশুদেরও অবর্ননীয় কষ্ট পেতে হয়।
কোরপাই গ্রামের জাহিদ, রফিক,আক্রামসহ একাধিক লোক জানান, বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি বা সরকারী লোকজন এসে সড়কটি উন্নয়নের কথা বললেও গত ২০/২২ বছরে কোন সংস্কার হয়নি। তারা আরোও বলেন, সড়কটির বিভিন্নস্থানে গর্ত হয়ে এতটাই কর্দমাক্ত অবস্থা যে,সিএনজি অটোরিক্সা বা ব্যাটারীচালিত ইজিবাইকও চলাচল করতে চায়না। অথচ সড়কটি ব্যবহারের উপযোগী হলে ১০/১৫ টাকায় স্বাচ্ছন্দে ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবে।
সড়কটির বেহাল অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে মোকাম ইউনিয়নের কোরপাই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য উপরের অনুমোদন পাওয়া গেছে অচিরেই কাজ হবে।
বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী অনুপ কুমার বড়ুয়া জানান, সড়কটি বিগত সময়ে কখনোই সংস্কার বা মেরামত হয়নি। সম্প্রতি সড়কটি উন্নয়নের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সড়কটি উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।