কুমিল্লা তিতাসের বিদ্যালয়গুলোর আঙিনা যেন আবর্জনার স্তুপ

কুমিল্লা তিতাস উপজেলা প্রাথমিক, মাধ্যমিক, সমমান পর্যায়ের কিছু মাদরাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ডাকঘরে বেহাল দশা বিরাজ করছে। মহামারির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন খালি থাকায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফসল তোলার মাঠ ও লাকড়ি রাখার পরিত্যক্ত স্থানে পরিণত হয়েছে।
তিতাসে ৩টি কলেজ, ১৫টি উচ্চ বিদ্যালয় , ৭টি মদ্রাসা ও ১টি রেজিস্টারসহ মোট ৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তিতাস উপজেলার রতনপুর ভূঁইয়া বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ধানের খড় ও তিল গাছের স্তূপ, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দিয়ে জঙ্গল সৃষ্টি হয়েছে।
চর-রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দার লোহার বেড়িগুলো ভেঙে পড়ছে এবং পাশে বসে যুবকরা মোবাইলে গেমস খেলছে। নারান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কলিমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনগুলোর দেয়ালে ধরে রং ও আস্তর সরে যাচ্ছে, মাঠে ঘাস গজাচ্ছে। স্কুলের পাশে নারান্দিয়া কাচারি ঘর ও ডাকঘরের দরজা জানালাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মঙ্গল কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গাছের ডালা কেটে তা লাকড়ি করে স্কুলের সামনে রেখে শুকাতে দেখে গেছে। ৫৬নং খলিলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় দেখা যাচ্ছে লাকড়ি খড়ির স্তূপ ও স্কুলের জানালায় মরিচা ধরে গেছে।
রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় লাকড়ি খড়ির স্তূপ ও রঘুনাথপুর কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন মাঠে খড়ের স্তূপ। শাহাবৃদ্ধি আ. কাদির ভূইয়া মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে নতুন ভবন নির্মাণের রড,সিমেন্ট রাখা হয়েছে ও নির্মাণ শ্রমিকদের বসবাস করতে এবং স্কুলের ভেতরে কাপড় শুকাতে দেখা গেছে।
রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা আক্তার জানান, এ ব্যাপারে গ্রামবাসীকে অনেকবার সচেতন করেছি স্কুল মাঠে কিছু না রাখার জন্য এবং কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারও করেছি। তারপরও তারা কথা শুনছে না।
অপরদিকে মেহনাজ মীম আদর্শ সরকারি কলেজ, গাজীপুর খান সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ গার্লস কলেজ মাঠে গজিয়েছে ঘাস এবং গাছের পাতা পড়ে মাঠে আর্বজনার সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার ফাজিল-দাখিল ও আলিম মাদ্রাসাগুলোতেও দেখা গেছে একই চিত্র।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান, করোনাকালীন সময়ে স্কুল খোলা না থাকায় নিয়মিত তা পরিচর্যা করা হচ্ছে না। তাছাড়া আমরা সবসময় স্কুলগুলো পরিচর্যার বিষয়ে সব প্রধান শিক্ষকদের সচেতন করে থাকি। আর স্কুল মাঠে বা বারান্দায়া খড়ের স্তুপ লাকড়িসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র রেখে যদি কেউ স্কুলকে ময়লা আবর্জনা বা নোংরা করে থাকে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারা চৌধুরী জানান, কোভিড-১৯ এর কারণে সারাবিশ্বই এখন অচল। হাই স্কুলগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পদচারণা না থাকায় এ বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়। আমরা জুম মিডিয়া ও অনলাইনের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা পড়া চালিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছি। স্কুল-কলেজ খোলা না থাকলেও আমরা শিক্ষকদের পরিচর্যায় বিষয়টি অবগত করিয়েছি।
এ ব্যাপারে ইউএনও মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার জানান, স্কুল,কলেজ ও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ময়লা আবর্জনা করার বিষয়টি দুঃখজনক। এটি মেনে নেয়া যায় না। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।