কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে লড়তে দলীয় পদ ছাড়লেন বিএনপির সাক্কু ও কায়সার
আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) ভোটে অংশ নিতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু।
নেতাকর্মীদের ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। তবে বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন সাক্কু।
সাক্কুর ব্যক্তিগত সহকারী কবির মজুমদার জানান, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর মনোনয়নপত্র বৈধ ষোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করেছেন। ১৯ মে তার পদত্যাগপত্র দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি রাবেয়া চৌধুরীর হাতে পৌঁছানো হয়েছে। যার অনুলিপি কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবরও পৌঁছানো হয়েছে।
পদত্যাগ পত্রে সাক্কু উল্লেখ করেন, আমার দল একটি যৌক্তিক ও জন দাবি নিয়ে (নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার) বর্তমান সরকারের আধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত। দীর্ঘদিন মেয়র থাকার কারণে নগরবাসী ও কর্মীদের অনুরোধে আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দলীয় পদ ধারণ করে নির্বাচনে যাওয়া বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হবে। তাই আমি দলের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে দলীয় পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।
অপরদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিএনপি আরেক নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পর বুধবার দুপুরে নিজাম উদ্দিন কায়সার স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) ও কুমিল্লা মহানগরের সভাপতির পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
ধর্মসাগর পাড়ের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই মেয়র প্রার্থী বলেন, “আমার দল একটি যৌক্তিক আন্দোলনে থাকার কারণে এই অবৈধ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমিও একমত।”
“কিন্তু কুমিল্লায় হামলা-মামলার শিকার ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের অনুরোধে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। তাই দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে আমি কেন্দ্রীয় ও কুমিল্লা মহানগর দলীয় পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।”
নিজাম উদ্দিন কায়সার আরও বলেন, তিনি ভোট চাইবেন ‘ক্লিন সিটি’ গড়ার জন্য। যেখানে সিটি হবে সবার।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কায়সার ছাড়াও বিএনপি নেতা ও সদ্য সাবেক মেয়র মো. মনিরুল ইসলাম সাক্কু স্বতন্ত্রভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাক্কু এরই মধ্যে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াইয়ে আরও চার প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আরফানুল হক রিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী কামরুল আহসান বাবুল ও ইসলামী আন্দোলনের রাশেদুল ইসলাম।