কুমিল্লায় বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা
এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার সুইটি শুক্রবার সন্ধ্যায়ও বাবার সঙ্গে কথা বলেছিল। কিন্তু গভীর রাতে বাবার মৃত্যুতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া। শেষ পর্যন্ত বাড়িতে বাবার লাশ রেখে চোখের পানি মুছতে মুছতে কেন্দ্রে গিয়ে পুরো ২ ঘণ্টাই পরীক্ষা দিয়েছে সুমাইয়া। কেন্দ্রে তাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন কক্ষ পর্যবেক্ষকসহ অন্যরা।
সুমাইয়া কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। সে স্থানীয় কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। শনিবার ছিল বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা।
কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান সুমাইয়া খুবই মেধাবী। তার বাবা আবুল কাশেম ছিলেন গাড়িচালক। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সুমাইয়া সবার বড়। বাবা মারা যাওয়ার পর সহপাঠীদের সহযোগিতায় নিজেকে সামলে নিয়ে বাড়ি থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আসে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুমাইয়া বলে, অনেক কষ্ট করে বাবা আমার লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন। বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন শিক্ষক হই। বাবার স্বপ্ন পূরণে আমি বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা দিতে যাই। পরীক্ষাও ভালো হয়েছে। আপনারা দোয়া করবেন যেন আমি বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শনে যাওয়া কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ইউএনও শুভাশিস ঘোষ বলেন, মেয়েটির বাবা মারা যাওয়ার খবর জানতে পেরে আমি কক্ষে কর্তব্যরত শিক্ষকদের বলেছি সে যেন নার্ভাস না হয়। সে নিজেকে স্বাভাবিক রেখেই ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। পরে সুমাইয়াকে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বাড়ি পৌঁছে দেয়।