দুবাইয়ে এক লাখ দিরহাম পেয়ে ফেরত দিলেন কুমিল্লার লিটন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে এক বাংলাদেশি এক লাখ দিরহামসহ মূল্যবান মালামাল কুড়িয়ে পেয়ে ফেরত দিয়েছেন মালিকের কাছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ লিটন সেখানে একটি কার ওয়াশ কোম্পানির সুপারভাইজার হিসেবে কমর্রত রয়েছেন।
তিনি জানান, দুবাইয়ের ওই স্বনামধন্য একটি কার ওয়াশ কোম্পানিতে গত প্রায় ১২ বছর ধরে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছেন তিনি। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিষ্ঠানে সব কিছু চেক করার সময় একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। পরে ব্যাগটি খুলে এতে এক লাখ দিরহাম, দুটি আইফোন ও ব্যাংক চেক দেখতে পান।
তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী তিনি নিরাপত্তারক্ষীর কাছে ব্যাগটি জমা দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ব্যাগটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
লিটন বলেন, “ঘটনার সময় দেশটির পুলিশ এসে আমাকে প্রশ্ন করে- ব্যাগটি আমি কেন নিজে না রেখে ফেরত দিলাম। তখন আমি বলছি – এগুলো আমার না, আমার দায়িত্ব যা তা-ই পালন করেছি।”
পুলিশ তদন্ত শেষে ব্যাগটি প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে লিটন জানান।
তিনি আরও বলেন, “এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমাকে সততার জন্য একটি আইফোন, নগদ অর্থ ও গোল্ড সাটিফিকেট প্রদান করে। আমি মনে করি এ ঘটনায় শুধু আমার নয়, বাংলাদেশের সম্মান বেড়েছে। সম্মানটা আমার কাছে বড়, এ সংবর্ধনায় আমি খুশি।”
তিনি জানান, গত শুক্রবার ইউসুফ লিটনের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন দুবাই পুলিশের ডিরেক্টর অব ক্রিমিনাল সিকিউরিটি সেক্টরের মেজর জেনারেল মো. সুহাইল আল রশিদী।
এ সময় ক্রিমিনাল সিকিউরিটি সেক্টরের ডেপুটি ডিরেক্টর মেজর জেনারেল মুসলিম আল আমিনি, ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টর মেজর রশিদ খালাফ আল দাহেরি, দুবাই টুরিস্ট পুলিশ ডিপার্টমেন্টের প্রধান রশিদ মোহাম্মদ আল মুহাইরিসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
লিটনের এমন অর্জনে খুশি তার ছোট ভাই ইউসুফ রিপন বলেন, “আমার বড় ভাই সৎ লোক। বিদেশের মাটিতে সততার এ পুরস্কার পাওয়ায় আমাদের পরিবারের সবাই খুব খুশি। ভাইকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। আমি মনে করি এ ঘটনায় বাংলাদেশের সম্মান বেড়েছে।”
এক লাখ দিরহাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৭ লাখ টাকার মতো।
লিটন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের শাকতলা গ্রামের আবদুল গাফফারের ছেলে। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাইয়ে কর্মরত রয়েছেন।