পাখির কলরবে মুখর কুমিল্লার বিল
কুমিল্লার পুকুর ও হ্রদসহ বিভিন্ন জলাশয়ে বিচরণ করছে শত শত পরিযায়ী পাখি। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখর আশপাশের এলাকা। পাখিদের ওড়াউড়ি ও জলকেলিতে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা।
পরিযায়ী পাখি দেখতে জলাশয় ঘিরে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন।
জেলার আদর্শ সদর উপজেলার চম্পক নগর এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত একটি হ্রদে দেখা যায়, পাখির উপস্থিতিতে প্রকৃতিতে তৈরি হওয়া অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে নানা জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা এসেছেন।
স্থানীয়রা জানান, এ জলাশয়ে কয়েক বছর ধরে পরিযায়ী পাখি আসছে। ওদের কিচিরমিচির আওয়াজ মুগ্ধ করে। এ জলাশয়ে মাছ আছে। পর্যাপ্ত খাবার থাকায় এখানে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে।
পুকুরের মালিক গাজী রিয়াজ মাহমুদ বাসসকে বলেন, “গত চার বছর ধরে পুকুরটি অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমি এই পরিযায়ী পাখিদের যেন কেউ ক্ষতি করতে না পারে সেটি ব্যবস্থা করেছি।”
ওয়াইল্ড ওয়াচ ইনফো কুমিল্লার পরিচালক জামিল খান বাসসকে বলেন, “কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে ধর্মসাগর ও ছোট জলাশয়ে অতিথি পাখিরা অবস্থান করত।”
তবে পরিবেশের অবনতির কারণে বর্তমানে সেখানে কোনো অতিথি পাখি থাকে না বলে জানান তিনি।
“শীতের দেশের পাখিরা আমাদের দেশে আসে। তারা একটু উষ্ণতা এবং নির্জন স্থান, জলাশয় এবং বনের আশায় হাজার হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করে,” তিনি যোগ করেন।
দুর্ভাগ্যবশত, অতিথি পাখিরা শিকারীদের হাতে ধরা পড়ায় এদেশে অতিথি হিসেবে থাকতে পারে না। পাখিরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। কুমিল্লার পুকুরগুলোতে পাখিরা যাতে থাকতে পারে সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অমিতাভ কুমার বাড়ৈ বাসসকে বলেন, “প্রতি বছর সাইবেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড ও তিব্বতের উপত্যকা অঞ্চল থেকে অতিথি পাখি আসে। পাখির মধ্যে আছে বলধেঁস, রাজহাঁস, মানিকজোড়, গাংবুটার, চাইনিজ গিজ, নাইরাল লাঙ্গি, বোলাপাখি, হরিয়াল, বনহুর, বুর্লিহাস এবং সিরিয়ান পাতিরা।”
তিনি বলেন, “পাখিরা শুধু আবর্জনা খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে না, তাদের প্রস্রাবে ফসফরাসও থাকে যা সবজি উৎপাদনে সহায়ক।”
তিনি বলেন, “পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য সবাইকে পাখি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।”