কুমিল্লায় সাংবাদিকের ওপর হামলা, যুবদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
কুমিল্লা নগরীতে এক যুবদল নেতা ও এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ সড়কের ঢুলিপাড়া মোড়ে এই হামলা হয় বলে অভিযোগে বলা হয়।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হামলার শিকার সাংবাদিক আবু সুফিয়ান রাসেল।
রাসেল কুমিল্লার স্থানীয় ‘দৈনিক আমাদের কুমিল্লা’র স্টাফ রিপোর্টার এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, কুমিল্লার প্রকাশনা সম্পাদক।
এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে কুমিল্লায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
যাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তারা হলেন কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নগরীর থিরাপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল হোসেন কাওছার এবং ঢুলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুদ তালুকদার।
সাংবাদিক আবু সুফিয়ান রাসেল বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সংগ্রহের কাজ শেষে আরেক সহকর্মীর মোটরসাইকেলে শহরে ফিরছিলেন তিনি। তাদের বাইকটি ঢুলিপাড়া মোড়ে এলে উল্টোপথে আসা একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা বাইকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটির একটি পার্টস ভেঙে যায় এবং তিনি পায়ে আঘাত পান।
“এ সময় রিকশা চালকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে তিনি যেন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে না পারেন সেজন্য আমি রিকশায় উঠে বসি।”
আবু সুফিয়ান আরও বলেন, এমন সময় কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল হোসেন কাওছারের নেতৃত্বে তার উপর হামলা চালানো হয়। ওই যুবদল নেতা প্রথমে তার জামার কলার ধরে রিকশা থেকে নামিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা স্থানীয় ব্যবসায়ী মাসুদ তালুকদার তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় বলে তিনি জানান।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা এমরান এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা সেটিও তদন্ত করে দেখার দাবি জানাচ্ছি।”
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইয়িদ মাহমুদ পারভেজ বলেন, “এখন সাংবাদিকদের ওপর হামলাটা মনে হয় পেশায় পরিণত হয়েছে। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া যাবে না। দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
থানায় লিখিত অভিযোগ হওয়ার পর থেকে এ দুজন গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহাম্মদ সঞ্জর মোর্শেদ বলেন, “এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম আসামিদের আটক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছি।”
কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউপি চেয়রম্যানের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনায় এসেছে।