স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে অনন্য কুমিল্লা গোমতী হাসপাতাল

মাত্র বছর কয়েক আগেও গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসব ছিল খুবই সাধারণ ঘটনা। কিন্তু সময়ের বিবর্তন ও অস্ত্রোপচারে শিশু জন্মদানের প্রবণতায় অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল। সমাজের অভিজাত শ্রেণীর মানুষেরও প্রসববেদনা ভীতির কারণে আগ্রহ অস্ত্রোপচারের প্রতি। ইউরোপ-আমেরিকা- মধ্যপ্রাচ্যে নারীদের সুস্থতার দিকটি বিবেচনা করা প্রায় ৯৫% নারীর জন্য নরমাল ডেলিভারী করিয়ে থাকে । ঠিক তেমনটি করে কুমিল্লার গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের লক্ষ্যে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ টি নরমাল ডেলিভারি করাচ্ছেন ডা. শাহিদা আক্তার রাখী ।

ডা. শাহিদা আক্তার রাখী কুমিল্লার স্বনামধন্য হাসপাতাল গোমতী হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন । গর্ভবতী মায়েদের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই নির্বিচারে সিজারিয়ান অপারেশনের অভিযোগ যখন বেশির ভাগ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে খুবই জোরালো- ঠিক তখনই কুমিল্লা শহরের প্রান কেন্দ্রে গোমতী হাসপাতালে ব্যথামুক্ত নরমাল ডেলিভারির নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এমনিতেই গোমতী হাসপাতালে পলিসি হলো স্বাভাবিক ডেলিভারিকে উৎসাহিত করা। নতুন এই সেবায় ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন অভিভাবক ও গর্ভবতী মায়েরা।

প্রসূতি মায়েদের এখানে বিশেষ যত্ন ও নিবিড় সেবাদানের কারণে অনেকের কাছে হাসপাতালটি বিশেষ আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছে। দক্ষ চিকিৎসক, ধাত্রী ও নার্সদের সার্বক্ষণিক সেবা এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানের কারণে হাসপাতালটিতে দিন দিন রোগীর ভিড় বাড়ছে।

গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. শাহিদা আক্তার রাখী বলেন, সঠিক চিকিৎসা, তত্ত্বাবধান, বিশ্বাস ও আস্থার মাধ্যমে অধিকাংশ প্রসূতি স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দিতে পারেন। বিষয়টি প্রসূতি ও তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করাতে হয় আমাদের। এছাড়া সিজারিয়ানের নানা কুফল রয়েছে তাও তাদের অবহিত করা হয়। এভাবেই সবাইকে নিরাপদ স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের দিকে এগিয়ে আনতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের মূল স্লোগানই হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশনকে না বলুন, স্বাভাবিক প্রসবকে উৎসাহিত করুন।

নারীর জীবন পরিপূর্ণতা পায় মা হওয়ার মধ্য দিয়ে। গর্ভাবস্থায় একজন নারী মা হবার আনন্দে যেমন বিভোর থাকেন ঠিক তেমনি নানান বিপদের কথা ভেবে শঙ্কিত থাকেন। সকল গর্ভাবস্থাই আপেক্ষিক ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ ঝুঁকির পরিমাণ কম আর বেশি। অন্তঃসত্ত্বা নারীর মানসিক চাপ গর্ভস্থ সন্তানের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ও গর্ভের ভ্রুণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই মানসিক চাপ এড়িয়ে প্রশান্ত থাকা জরুরি। এতে মা ও শিশু দুজনেরই সুস্থতা নিশ্চিত হয়।

নিরাপদে মা হবার জন্য পেটে সন্তান এসেছে বুঝামাত্র গর্ভকালীন পরিচর্যা শুরু করতে হবে।

গর্ভকালীন পরিচর্যার মাধ্যমে গর্ভধারণ, প্রসব পরবর্তী অনেক বিপদ এড়ানো সম্ভব এবং নিরাপদ প্রসব ও স্বাস্থ্যবান সন্তান লাভ নিশ্চিত করা যেতে পারে।

গর্ভকালীন পুরো সময় থেকে প্রসবের কিছুদিন পরও নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপমুক্ত থাকতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।

এছাড়া তিনি জানান প্রিকনসেপশনাল কাউন্সেলিং খুব প্রয়োজন , যেন হবু মায়ের সন্তান ধারণের আগে সুস্থতা নিশ্চিত ও সুস্থ সবল সন্তান জন্মদান, গর্ভকালীন সতর্কতা, প্রসবকালীন এবং প্রসব পরবর্তী জটিলতা এড়ানোর লক্ষ্যে প্রিকনসেপশনাল কাউন্সেলিং অত্যন্ত জরুরি ।

আরো পড়ুন