কুমিল্লায় শ্যালিকার সঙ্গে ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় দেখে ফেলায় শিশু সায়মনকে হত্যা

কুমিল্লায় ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় দেখে ফেলায় শিশু সায়মনকে হত্যার পর মরদেহ গুম করেন পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকা। এ ঘটনায় জড়িত পরকীয়া প্রেমিক বিল্লাল পাঠানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার মো. আশফাকুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক ও ডিবি) মো. নাজমুল হাসান, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি রাজেস বড়ুয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১৬ আগস্ট থেকে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের খোরশেদা আক্তারের ছেলে সাত বছরের সায়মন নিখোঁজ হয়। এরপর ১৯ আগস্ট সকালে কড়িকান্দি ইউনিয়নের কলাকান্দি বালুর মাঠের ঝোপে তার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া হয়। এ ঘটনায় তিতাস থানায় একটি মামলা করেন নিহত ওই শিশুর মা খোরশেদা আক্তার।
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হলে মো. বিল্লাল পাঠানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এবং তারে প্রেমিকা শেফালী আক্তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। তিনি জানান, শেফালী আক্তার সম্পর্কে তার স্ত্রীর বড় বোন। শেফালীর স্বামী প্রবাসী হওয়ায় তাদের মাঝে একটা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়।
গত ১৬ আগস্ট বিকেলে বিল্লাল ও শেফালী অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। এ অবস্থায় ওই বাড়িতে খেলতে যাওয়া সায়মন তাদের ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় দেখে ফেলে। এ সময় সায়মন বলে ওঠে, ‘দেইখা ফালাইছি হগলরে কইয়া দিমু’। সায়মনের কথা শুনে বিল্লাল আতঙ্কিত হয়ে তার গলা ও মুখ চেপে ধরেন। সায়মন যেন এ কথা কাউকে জানাতে না পারে সেজন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা।
শেফালী তার ঘরে থাকা ছুরি এনে দিলে বিল্লাল সায়মনের বুকের দুই পাশে তিন থেকে চারটি আঘাত করেন। এতে মারা যায় শিশু সায়মন। এরপর বিল্লাল ও শেফালী প্লাস্টিকের বস্তায় সায়মনের মরদেহ ভরে খাটের নিচে রেখে দেন। পরে রাত ১২টার পর গুম করার জন্য বাড়ির পাশে বালুর মাঠের কাশবনে মরদেহটি ফেলে দেন। এরপর এক ধরনের কেমিক্যাল ঢেলে সায়মনের মরদেহ বিকৃত করেন বিল্লাল।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ঘটনার চার দিন পর গত ২০ আগস্ট পুলিশ শেফালী আক্তারকে তিতাস উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় রক্তমাখা প্লাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করা হয়।