কুমিল্লার মুরাদনগরে টুপি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে টুপি কারিগররা
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কুমিল্লার মুরাদনগরে টুপি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে টুপি কারিগররাা। এসব টুপি সৌদি আরব, কাতার, দুবাই, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে টুপি রফতানি হচ্ছে। গত অর্ধযুগ ধরেই দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে মুরাদনগরের টুপি রফতানি হচ্ছে বিদেশে। বছরজুড়ে কারিগররা এ টুপি তৈরি ও রফতানিতে ব্যস্ত থাকলেও রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে এর চাপ বেড়ে যায়।
টুপি কারিগররা জানান, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদের মৌসুমে টুপি তৈরির চাপ অনেক বেশি থাকে। প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে অর্ধ শতাধিক পরিবারের অসহায় নারী গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরি করে বাড়তি উপার্জনের মাধ্যমে সংসারের চাহিদা মেটাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে এসব নারী তাদের হাতের নিপুণ কারুকাজের মাধ্যমে তৈরি করছে আধুনিক মানের টুপি।
প্রবাসে টুপি রফতানিকারক ইয়াকুব আলী বলেন, কাপড় কেটে ছাপ দিয়ে তাতে নকশা তৈরি করা হয়। টুপিতে সুই সুতা দিয়ে নানা ধরনের নকশা কাটা হয়। পরে তা বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষেই তা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়।
টুপি তৈরির কারিগর মোছা. নূরজাহান বেগম বলেন, প্রতিদিন গড়ে তিনটি টুপি তৈরি করতে পারেন তিনি। প্রতিটি টুপির মজুরি হিসেবে ৩৫ টাকা পান তিনি। সংসারের কাজের পাশাপাশি টুপি সেলাই করে সংসারের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।
উপজেলা সদরের নাজমা বেগম (৩০)। তিনি প্রায় ৬ বছর ধরে টুপি তৈরি করেন। তিনি বাসসকে বলেন, করোনার কারণে পাইকারী ব্যবসায়ীদের টুপি কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন করোনা পরিস্থিতি পাল্টেছে ঈদকে সামনে রেখে টুপি ব্যবসায় আবারও জোয়ার এসেছে। ব্যবসায়ীরা যোগাযোগ করছেন আমাদের সাথে।
স্থানীয় মুসল্লী মুন্সী অনোয়ার পাশা বলেন, মুরাদনগর উপক্জেলা সদরের প্রায় প্রতি বাড়ির নারী পুরুষেরা এ টুপি তৈরিতে যুক্ত। বিদেশে এ টুপি বিক্রি করে টাকা উপার্জন করছে। এই টুপি ওমানে প্রায় বাংলাদেশের টাকায় ৩/৪ হাজারে বিক্রি হয়।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন জানান, এলাকার অসহায় নারীরা টুপি তৈরির এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে স্থানীয়ভাবে একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নারীরা সংসারের কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরির কাজ করায় তাদের আর্থিক উন্নয়ন ঘটছে।