কুমিল্লায় ৩২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরখাস্ত কলেজ অধ্যক্ষ স্বপদে ১৬ বছর পর
২০০৭ সালের মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষ পদ থেকে আব্দুস সাত্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
৩২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রায় ১৬ বছর আগে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন আব্দুস সাত্তার।
এর পর দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তাই আদালত আব্দুস সাত্তারকে অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন।
এর আগে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আদালতে মামলা করেন আব্দুস সাত্তার। এর পর প্রায় ১৬ বছর ধরে মামলাটি লড়েছেন তিনি। শেষপর্যন্ত নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। তাই উচ্চ আদালত তাকে অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) আব্দুস সাত্তার কলেজে স্বপদে ফেরেন। কলেজে আসার পর তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এছাড়াও তার আগমন উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৭ সালের মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষ পদ থেকে আব্দুস সাত্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
দেবিদ্বার জোবেদা খাতুন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ মাসুদ পাখী আহ্বায়ক, জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. বাবুল ভূঁইয়া ও দুয়ারিয়া এজি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়াকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি কলেজ তহবিলের ৩২৬ টাকা আত্মসাত করেছেন মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে। এ অভিযোগে আব্দুস সাত্তারকে ২০০৯ সালে ১ জানুয়ারি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
ওই বরখাস্তের প্রতিবাদে আব্দুস সাত্তার আদালতে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি উচ্চ আদালত আব্দুস সাত্তারকে বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানসহ অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকার রায় দেন।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফের মালমাটি চলমান থেকে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার উক্ত আপিল খারিজ করে তার সমুদয় বকেয়া বেতন ভাতাদিসহ অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের রায় বহাল রাখেন।
অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবে আমাকে বিনা দোষে হয়রানি করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত করাকালে আমার বেতন-ভাতাদির অর্ধেক দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সেই ভাতা বন্ধ রাখা হয়। হুমকির মুখে কুমিল্লায় বাসা নিয়ে থাকলেও সেখানেও পুলিশ পাঠানো হয়। মামলা তুলে নিতে হাইকোর্টের বারান্দা থেকে সন্ত্রাসী দিয়ে তুলে এনে নির্যাতন করেছিল।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, আদালত আব্দুস সাত্তারকে মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছেন। কাগজপত্র দেখে তাকে যোগ দিতে বলেছি।