বৈষম্যবিরোধীদের ‘প্রতিবন্ধী প্রজন্ম’ বলে অধ্যক্ষের ফেসবুক পোস্ট

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ‘প্রতিবন্ধী প্রজন্ম’ উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার। এ ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন।

অধ্যক্ষের ফেসবুক পোস্ট ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক’ দাবি করে কলেজের এক প্রভাষক লিখিত অভিযোগ করার পর এই নির্দেশনা দিল প্রশাসন। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে আদেশের কপি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোবাশ্বের হোসেন।

অধ্যক্ষের ফেসবুকের পোস্টের স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, আবদুর রউফ সরকার লিখেছেন, ‘আমাদের চোখের সামনে একটি প্রতিবন্ধী প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। যারা এদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য জানে না। এদেশের সংস্কৃতির সাথে যাদের মানসিক যোগ নেই। এই কোটা সংস্কার আন্দোলনের পিছনে যারা মদদ দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য কোটা সংস্কার নয়; অন্য কিছু, যা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বুঝতে ভুল করেছে…।’ তবে স্ট্যাটাসটি কবে দেওয়া, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জানা গেছে, গত রবিবার (২০ অক্টোবর) দিনভর লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গেটে ওই অধ্যক্ষকে চূড়ান্ত বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার দাবিতে অনশন করেন একই কলেজের প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না। পরে জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অনশন ভাঙেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই-আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটায়। এ আন্দোলনকে প্রতিবন্ধী প্রজন্ম উল্লেখ করে গত ১৮ জুলাই নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে করেন অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ। এ ঘটনার পর অধ্যক্ষ আব্দুর রউফকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে গত ২০ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না।

প্রভাষকের করা অভিযোগ তদন্ত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে প্রতিবন্ধী প্রজন্ম বলে প্রচার করার সত্যতা পায় জেলা প্রশাসন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কটাক্ষ করায় অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকারের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়ে ২১ অক্টোবর পত্র জারি করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) এস এম শাফায়াত আখতার নুর।

প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না বলেন, ‘মামলা ও বরখাস্তের আদেশ দিলেই হবে না। আগামী রবিবারের মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে পুনরায় অনশন করব।’

আরো পড়ুন