কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে প্রবেশে বাধা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৮ টায় কুবিতে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক পক্ষ চলমান ‘ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ’-এর বিরোধিতা করে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনকে নিয়ে একটি গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসে। গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন এসে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করাতে চান। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। দুই পক্ষের হট্টগোলে পুলিশ সুপার কিছুক্ষণ মূল ফটকে অপেক্ষা করেন। পরবর্তীতে ফিরে যান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসা হয়নি। তাই আজকে এক জায়গা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম।’
তবে সমন্বয়ক ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আমরা উনাকে ইনভাইট করেছিলাম। কিন্তু উনি যে আসবে বিষয়টি বিকেল পর্যন্ত নিশ্চিত ছিলো না। স্যারের ব্যস্ততার কারণে উনি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে একটু আলোচনা করতে এসেছিলেন।’
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত মো. হান্নান রহিম খিচুড়ি ভোজ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘যেখানে আন্দোলনে আহতরা এখনো হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে, দাউদকান্দিতে আজকেও একজন মারা গিয়েছে; সেখানে খিচুড়ি ভোজ, নাচ-গান এসব তো একপ্রকার তাদের প্রতি মশকরা করার মতো। আহত অনেকেই চাচ্ছে তাদেরকে যেনো যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থাটা অন্তত করে দেয়া হয়। এমন একটা সিচুয়েশনে এরকম একটা আয়োজনের কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি এই আয়োজনে টাকার যোগান দিয়েছেন সাবেক এক কাউন্সিলর। এছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল অনেকটা ইচ্ছাকৃতভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করার জন্য আন্দোলনের এই পর্যায়ে এমন একটি আয়োজনের অর্থায়ন করেছে। তাই তাকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’
সার্বিক বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘পুলিশ সুপার যে আসবেন আমরা জানি না, আমাদের কাউকে জানানোও হয়নি। তাকে যে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে সেটাও আমাদেরকে জানানো হয়নি।’