জাহাজে খুন, ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন বাবাও

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহত সাতজনের মধ্যে একজন মাগুরার মহম্মদপুরের সজীবুল ইসলাম। তার মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে মারা গেছেন তার বাবা দাউদ মোল্যা।

ছেলের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শোকে বাবার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সজীবুল ইসলামের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নে।

স্থানীয়রা জানান, ছেলে সজিবুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর কেঁদেই চলেছিলেন বাবা দাউদ মোল্লা। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনরা। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। মাস পাঁচেক আগে বিয়ে করেছিলেন সজিবুল। সপ্তাহ দুয়েক আগে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে গ্রিজার পদে চাকরি নেন সজীবুল। এর মাত্র কিছুদিন পরেই গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) চাঁদপুরের হাইমচরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে তাকেসহ সাতজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

সজিবুলের মামা আহাদ সর্দার সজিবুলের বাবা দাউদ মোল্যার মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ সজিবের বিয়ের পাঁচ মাস পূর্ণ হবে। দুই সপ্তাহ আগে বাড়িতে ধান কাটার কাজ করে গেছে সে। আগে যে জাহাজে কাজ করত সেই জাহাজে পদোন্নতির পরীক্ষা দিয়েছিল সজিবুল। ফলাফল পেতে দেরি হবে এ কারণে দুই সপ্তাহ আগে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে গ্রিজার পদে চাকরি নেয়।যাওয়ার সময় বাড়িতে বলে গেছে, রেজাল্টের অপেক্ষায় ঘরে বসে না থেকে ছোট একটা জাহাজে কাজ করে আসি, তাতে কিছু রোজগার হবে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।’

জাহাজে নিহত ব্যক্তিদের আরেকজন হলেন একই ইউনিয়নের চর যশোবন্তপুর গ্রামের আনিচুর রহমানের ছেলে মো. মাজিদুল ইসলাম (১৬)। মাজিদুল ঝামা বরকাতুল উলুম ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাদরাসা বন্ধ থাকায় জাহাজে কাজ নিয়েছিল কিশোর মাজিদুল।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহম্মদপুর ও নড়াইল সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইউনিয়নসহ পলাশবাড়িয়ার বহু মানুষ জাহাজে চাকরি করেন। এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এমভি সুলতান সানজানা নামের লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় মহম্মদপুর পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের চারজন নিহত হন।

আরো পড়ুন