টিএসসিতে ফের আঁকা হলো হাসিনার গ্রাফিতি, দুপুরে গণ জুতা নিক্ষেপ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারে মুছে ফেলা শেখ হাসিনার গ্রাফিতির (ঘৃণাস্তম্ভ) নতুন করে আগের রূপ দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে নতুন রূপ দেয়ার কাজ শুরু হয় গ্রাফিতির।
নতুন আঁকা এই গ্রাফিতিতে (ঘৃণাস্তম্ভ) গণ জুতা নিক্ষেপের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সকল ছাত্রসংগঠন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টায় এ গণজুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে শেখ হাসিনার ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলার ঘটনায় গভীর রাতেও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার রাত ১টার পর সেখানে একদল শিক্ষার্থীকে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
পরে সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মো. সাকিব বলেন, এনএসআই এর প্রেসক্রিপশনে ঢাবি প্রক্টর শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন। তবে আমরা সঙ্গে সঙ্গে এটার প্রতিবাদ জানিয়েছি। পরবর্তীতে প্রক্টর অফিসেও গিয়েছি। এসময় দুঃখপ্রকাশ করেছে বডি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার মুছে ফেলা গ্রাফিতি আবার আঁকা হচ্ছে। গ্রাফিতিতে অবিকল জুতা নিক্ষেপ, রক্তের প্রতীকস্বরূপ লাল রং, ইটপাটকেল প্রভৃতি থাকবে। গ্রাফিতি আবার আঁকা হলে সেখানে আমরা গণজুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করবো।
মেট্রোরেলের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন দুই পিলারের শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি আঁকে ছাত্রলীগ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর জনতা শেখ হাসিনার গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ, রক্তের প্রতীকস্বরূপ লাল রং, ইটপাটকেল ও ঝাড়ু মেরে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফলে একসময়ের গ্রাফিতি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীকে রূপ নেয়।
জানা যায়, শেখ হাসিনার ঘৃণাসূচক এই গ্রাফিতি শনিবার গভীর রাতে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দেন। একইসাথে সেখানে আবারও শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি এঁকে দেন তারা। এ ঘটনার পর প্রক্টরিয়াল বডির ব্যাপক সমালোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা। এসময় তারা প্রক্টরের পদত্যাগও জানান। পরে রবিবার বিকেলে এই গ্রাফিতি মোছার চেষ্টা ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ বলে জানিয়ে ঘটনাটির দুঃখপ্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি।
এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেট্রোরেলের দুটি পিলারে থাকা শেখ মুজিব এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঘৃণাসূচক গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। জুলাই আন্দোলনে এই দুটি গ্রাফিতি বিপ্লব, প্রতিরোধ এবং ফ্যাসিবাদ ধ্বংসের প্রতিনিধিত্ব করে। এই স্মৃতিকে তাজা রাখা এবং প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এটি প্রক্টরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এ জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরো সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করছি।