কুমিল্লার বুড়িচংয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা, কর্তৃপক্ষ নিরব
বুড়িচং প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার ভারতীয় সীমান্তবর্তী বুড়িচং এলাকার বাকশীমুল ইউনিয়নের একাধিকস্থানে প্রতিদিন অবাধে পাহাড় কাটছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিচয়ে একাধিক সিন্ডিকেট। এতে একদিকে পাহাড় নিশ্চিহ্নের সাথে সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় থাকা বনজ সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে প্রতিদিন। দিনে-রাতে সমানে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলেও প্রশাসন যেমন নিরব,তেমনি প্রভাবশালীদের ভয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদের ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে।
বুড়িচং উপজেলার বাকশিমূল ইউনিয়ন। ভারত সীমান্তবর্তী এই এলাকায় রয়েছে অনেক ছোট ছোট টিলা-পাহাড়। এই ইউনিয়নের পাহাড়পুর ও জঙ্গলবাড়ি এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এক শ্রেনীর প্রভাবশালী অবাধে দিনে-রাতে সমানে পাহাড় কাটছে দিনের পর দিন।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, জেলার সীমান্তবর্তী বুড়িচং উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে বেশ কিছুদিন ধরে টিলা-পাহাড় কাটা চললেও সাম্প্রতিক সময়ে বেপরোয়া ভাবে মাটি কাটা শুরু করে পাহাড়পুর এলাকায় যুবলীগ নেতা নামধারী নাসির এবং সরকার দলীয় সমর্থক পরিচয়ে জঙ্গলবাড়ি এলাকায় সুমন। তাদের নিয়োজিত বাহিনীর লোকজন প্রতিদিন সমানে কাটছে এই অঞ্চলের টিলা-পাহাড়।
অভিযোগ রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের লাকসাম-আখাউড়া জংশন এলাকার ডাবল লাইন নির্মানের কাজে এই মাটি ব্যবহার হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সুত্র জানায়,ম্যাক্সা নামের একটি কোম্পানী এই মাটি স্থানীয়দের কাছ থেকে ক্রয় করে মাটি ভরাটের কাজে ব্যবহার করছে। এতে করে সীমান্ত এলাকায় টিলা-পাহাড় নিশ্চিহ্নের পাশাপাশি বনজ সম্পদও নষ্ট হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুত্র জানায়,অবাধে মাটি কাটায় সীমান্তবর্তী এলাকার পাহাড়পুর,জঙ্গলবাড়ি এলাকার বহুস্থান সমতল ভূমিতে পরিনত হয়েছে। এদিকে মাটি কাটা চক্রটি বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় টিলা-পাহাড়ে থাকা হাজার হাজার গাছ কেটে দখলদারদের কাছ থেকে মাটি ক্রয়ে অগ্রিম বায়না দিচ্ছে। ফলে সীমান্ত এলাকায় থাকা বনজ সম্পদও ধ্বংসের পথে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান,সীমান্ত এলাকায় বন বিভাগের সামাজিক বন ধ্বংস করে প্রভাবশালীরা মাটি কেটে বিক্রি করছে। এতে পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। তবে অজ্ঞাত কারণে উপজেলা বা পুলিশ প্রশাসন মাটি কাটা বন্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা।
বিষয়টি জানতে বুড়িচং বাকশিমুল ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি বিষয়টি অবহিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।
বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া আফরিন বলেন,আমি কয়েকদিন আগে উল্লেখিত একটি স্থানে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করেছিলাম। আবারো অভিযান পরিচালনা করে মাটি কাটার যন্ত্রপাতি আটক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান বলেন,আমি বিষয়টি অবহিত নই।