জনবল সংকটে ধুঁকছে কুমেক হাসপাতাল
ডেস্ক রিপোর্টঃ জনবল সংকটে ধুঁকছে বৃহত্তর কুমিল্লার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী যেখানে প্রয়োজন ৫৬৪ জন সেখানে বর্তমানে রয়েছে মাত্র ১৪০ জন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাহত হচেছ চিকিৎসা সেবা।
কুমেক হাসপাতাল ঘুরে এবং চিকিৎসক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে মানুষ যায় চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য, কিন্তু হাসপাতালে একটানা এক সপ্তাহ যদি সুস্থ মানুষ রোগীর সঙ্গে অবস্থান করে, ভালো মানুষ ও অসুস্থ হয়ে যায়। যার প্রধান কারণ হলো অপরিচ্ছন্ন হাসপাতালের পরিবেশ। নেই বিশুদ্ধ খাবারের পানির ব্যবস্থা। খাবার ঘরের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ময়লা আর দুর্গন্ধ যুক্ত ড্রেনের পানি, পাশ দিয়ে হাটা মুশকিল। নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না টয়লেট। সব ডাক্তারদের রুমে নেই ওয়ার্ড বয়। ৫০০ বেডের হাসপাতালে গড় রোগীর সংখ্যা থাকে ৭৫০ জন। প্রতিদিন বহিঃবিভাগে রোগী ডাক্তারের পরামর্শ নেন আরো ৭০০ থেকে ৮০০ জন।
হাসপাতালে বিভিন্ন পদে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর রয়েছে চরম সংকট। হাসপাতালে ক্লিনার, আয়া, ওয়ার্ড বয়, বাবুর্চি, দারোয়ান, এমএলএসএস, মালি, লিফ্টম্যান পোস্টে পর্যাপ্ত জনবল নেই। যার ফলে বাড়তি কাজের চাপে থাকতে হয়, কর্মরত ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের। ২৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যা বাড়ানো হলেও দেয়া হয়নি সে অনুপাতে ৪র্থ শ্রেণির লোকবল। নিয়োগ বন্ধ কয়েক বছর। হাসপাতালে জনবলের অভাব, তবুও নিয়োগ দেয়া হয় না এই হাসপাতলে। হাসপাতালে প্রতিটি ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) লোক প্রয়োজন ১৮ জন, এ হিসেবে ১২টি ওটিতে লোক প্রয়োজন ৫৬ জন, সঙ্গে ট্রেচার বেয়ারা ২০ জন, অর্থাৎ ১২টি ওটিতে জনবল প্রয়োজন ৭৬ জন। ৩০ টি ওয়ার্ড ২৪ ঘণ্টা সুন্দরভাবে সেবা দিতে বিভিন্ন পদে জনবল প্রয়োজন ২৫০ জন। একটি ওয়ার্ডে তিন বেলা তিনজন করে দারোয়ান লাগবে, এ হিসেবে ৩০টি ওয়ার্ডে দারোয়ান প্রয়োজন ৯০ জন। পুরো হাসপাতালে পিয়ন দরকার কমে ১০০ জন, পিয়ন আছে ৯ জন। হাসপাতালে ৫০০ বেডের অনুমতি থাকলে ও গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ৭৫০-৮০০ জন।
প্রচণ্ড শীতে বা প্রচণ্ড গরমে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় ৯০০ জন। এই ৭৫০-৮০০ মানুষের খাবার রান্না করার বাবুর্চি আছে ১০ জন, বাবুর্চি প্রয়োজন কমে ৩০ জন। ৫টি লিফটে লিফটম্যান প্রয়োজন ১৮ জন, আছে ২ জন। কুমেক হাসপাতালে সরকারি হিসেবে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি আছে ৬৪ জন। আউটসোর্সিং হিসেবে কাজ করে ৭৬ জন। মোট ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি সংখ্যা ১৪০ জন। বহিঃবিভাগ, অন্ত-বিভাগ, জরুরি বিভাগে মোট লোক দরকার ৫৬৪ জন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, এখানে জনবল সংকট আমি আসার আগ থেকেই। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অবগত করেছি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ হবে। তবে কবে এই মুহুর্তে বলতে পারছি না।
সূত্রঃ মানবকণ্ঠ