কুমিল্লায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে কুলখানি অনুষ্ঠান পণ্ড (ভিডিও)
মোঃ মিজানুর রশিদঃ কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় প্রায় ৩০টি যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মনোহরগঞ্জ বাজার ও ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল শুক্রবার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা এলাকায় চৈতি কালাম সমর্থিত বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির প-িতের বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মেজবানে বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম ওরফে চৈতি কালাম শোডাউন করে দাওয়াতে আসছেন। এ সংবাদে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কর্ণেল (অবঃ) আনোয়ারুল আজিম সমর্থিত নেতা-কর্মীরা চৈতি কালামকে প্রতিরোধের ঘোষনা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়। এতে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে মনোহরগঞ্জ বাজার ও ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা এলাকায় কালাম সমর্থিতদের প্রায় ২০টি মোটরসাইকেল, ৮টা সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ৩টি প্রাইভেট কার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনাও ঘটে। এতে গ্রামবাসীরা আতংকিত হয়ে পড়ে।
অপর দিকে আবুল কালাম প্রকাশ চৈতি কালাম দুপুরে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত অস্ত্রধারী নিরাপত্তা বাহিনী ও বহিরাগতদের নিয়ে একটি গাড়ীবহর নিয়ে সাইরেন বাজিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশ করে। সেখানে অল্প কিছুক্ষন অবস্থান নিয়ে দ্রুত ফিরে চলে আসেন। তার প্রবেশের পর পরই উভয় গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হলে মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
আনোয়ারুল আজিম সমর্থিত মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ইলিয়াছ পাটোয়ারী জানান, ২০০৮ সালে আবুল কালাম প্রকাশ চৈতি কালাম প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে কাজ করে ধানের শীষের প্রার্থীকে ফেল করিয়েছেন। যার ফলে মনোহরগঞ্জে ত্যাগী নেতাকর্মীরা আজো তাকে মেনে নিতে পারছেনা। এ পরিস্থিতিতে চৈতি কালাম শোডাউন করে মনোহরগঞ্জে আসা ঠিক হয়নি। যার ফলে ত্যাগী নেতা কর্মীরা তাকে প্রতিরোধ করেছে।
চৈতি কালাম সমর্থিত বিএনপি সাধারন সম্পাদক সরওয়ার জাহান দোলন জানান, আমরা কালাম সাহেব সহ শান্তিপূর্ন ভাবে অনুষ্ঠানে গিয়েছি। কোন সমস্যা হয়নি।
এদিকে কেশতলা গ্রামের মোশাররফ হোসেন বাবুল অভিযোগ করেন, বিএনপির এ ধরনের কর্মসূচীর কারনে গ্রামের সাধারন জনগনের মাঝে আজ আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজন বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ করেছে বলে শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।