চান্দিনার মাইজখারে সেলিম-জামাল গ্রুপিং এর অবসান
নাজিম উদ্দিন ভূইয়াঃ চান্দিনা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যার দিক থেকে সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন মাইজখার। এই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এর আগে থেকে দুই প্রভাবশালী নেতার কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গ্রুপিং শুরু হয়। গ্রুপিং কোন্দল কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, মারামারি, ঘর-বাড়ি, দোকানপাট ভাঙচুর, ককটেল বিষ্ফোরণ এর ঘটনাও ঘটে। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩ বছরের গ্রুপিং ও সংঘর্ষের অবসান ঘটালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। এরই মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলেন- মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ্ সেলিম প্রধান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি মো. জামাল উদ্দিন।
চান্দিনার মহিচাইল ইউনিয়নের বাতাবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিকালে ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর মতবিনিময় সভায় হাতে হাত ও বুকে বুক মিলিয়ে ওই ঐক্যের সূচনা হয়। এসময় উভয় নেতা ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রাণ সঞ্চার ফিরে আসতে দেখা গেছে।
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আওয়ামীলীগ সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, কেউ ব্যক্তি স্বার্থে মাইজখার ইউনিয়নে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেনি। আমি ও সেলিম আমরা একে অপরের আত্মীয়। কিন্তু দলের নীতি-নির্ধারকদের বিচক্ষনতার অভাবে আমাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিয়েছে। ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের মতো উদার মানসিকতায় আজ আমরা এক হতে পেরেছি। নৌকার স্বার্থে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করবো।
মাইজখার ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি শাহ্ সেলিম প্রধান বলেন, আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ায় কারও প্রাণ দিতে হয়েছে, কেউ আবার পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। আমাদের নেতা ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের প্রচেষ্টায় যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। ভবিষ্যতে যেন আর কোন সংঘাত না ঘটে সেই দিকে আমরা সর্বদা সচেষ্ট থাকবো।
এ বিষয়ে স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে আমি নেতা হতে চাই না। আমি চাই সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীক নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে সকল নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মমিন সরকার, জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মুজিবুর রহমান, জেলা জজ কোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সহকারি পিপি এড. শাহজালাল মিঞা শিপন, মহিচাইল ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান একেএম রুহুল আমিন, উপজেলা আওয়ামীলীগ উপদেষ্টা আবু তাহের ভূইয়া, আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সুহিলপুর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ, উপজেলা যুবলীগ সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান সোহাগ, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মহিউদ্দিন, উপজেলা কৃষকলীগ নেতা জামশেদ আহমেদ প্রমুখ।