কুমিল্লার দেবিদ্বারে সম্পত্তির বিরোধে শিক্ষকের নামে সাজানো ধর্ষণ মামলা!

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের নামে ধর্ষণের অভিযোগে সাজানো মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। তারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার দাবি করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের রাজামেহার গ্রামের মুন্সী বাড়িতে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের নাম বদিউল আলম মুন্সী(৫২)। তিনি রাজামেহার গ্রামের মৃত. কফিল উদ্দিন মুন্সীর ছেলে। মাওলানা বদিউল গত প্রায় ২০ বছর ধরে রাজামেহার ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষকতা করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৫ বছর বয়সী এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে তার মা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে মামলা করেন। মামলার বাদী ওই শিক্ষকের একই বাড়ির বাসিন্দা মৃত.জয়নাল আবেদীন মুন্সীর স্ত্রী নাজমা বেগম। পরে এ ঘটনায় থানা পুলিশ বুধবার (২ এপ্রিল) অভিযুক্ত বদিউল আলমকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায় ।

রাজামেহার গ্রামের মেম্বার জহিরুল ইসলাম মুন্সী জানান, আমি নিজে তাদের উভয়ের প্রতিবেশী। একমাত্র মেয়েটির মায়ের স্বাক্ষতেই মামলা হয়েছে। মেয়েটি এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাই বোন। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলছে।
তিনি জানান, অভিযুক্ত বদিউল আলম মুন্সী আমার দেখা একজন ভালো, সৎ ও চরিত্রবান মানুষ। মামলার বাদী তার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি একাধিকবার অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে সালিসের সিদ্ধান্তে বাড়ি ছেড়েছেন। কিছুদিন পূর্বে বাড়িতে এসে ফের জমিসংক্রান্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এই মহিলার পক্ষে মিথ্যা মামলা করা অসম্ভবের কিছু না।

রাজামেহার ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, বদিউল আলম মুন্সী একজন ধার্মীক লোক। জমিজমা নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ চলছে। মামলার বাদী এসব ঘটনায় যুক্ত থাকার কারনে একাধিক সালিসে তাকে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিল। তার পক্ষে সাজানো সবকিছুই করা সম্ভব।

তিনি বলেন, স্বার্থ উদ্ধারে মানুষ এতো নিচে নামতে পারে কল্পনাও করতে পারিনা। প্রশাসনের প্রতি আমার দাবি থাকবে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষাসহ ডিএনএ পরীক্ষায় আসল সত্য বের করে আনা হোক। আর এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের ছেলে তাজুল ইসলাম বলেন, সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে আমার বাবার বিরুদ্ধে এমন নোংরা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এলাকার প্রতিটি মানুষ জানে আমার বাবা কেমন মানুষ। আমি তদন্তের মাধ্যমে এ সাজানো ঘটনায় জড়িত সকলের বিচার চাই।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বাদী দাবি করেন, মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় অভিযুক্ত বদিউল আলম আমার বুদ্ধি প্রতিবন্দী মেয়েকে তার নিজ ঘরে সকলের অগচরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি তখন রাজামেহার বাজারে ছিলাম। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১১টায় বাড়ি এসে দেখি অভিযুক্ত বদিউল আলম ধর্ষণ শেষে ঘর থেকে দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে। পরে এ ঘটনায় থানায় গিয়ে মামলা করি। আমি তার শাস্তি চাই।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিঠুন সিংহ জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। ভিক্টিমের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর সঠিক কারন জানা যাবে। আর তদন্তের পরই ঘটনার সত্যতা জানা যাবে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন