কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে চরম ভোগান্তিতে কুমিল্লার ঘরবন্দী মানুষ। জেলার বিভিন্ন স্থানে গত তিন দিন বিদ্যুৎ না থাকার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।

মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যুৎ না থাকার ফলে টেলিভিশনের শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এছাড়াও শিশু, অসুস্থ মানুষ, রিফ্রিজারেটরের খাবার নষ্ট, মোবাইলে যোগযোগসহ নানা ভোগান্তিতে শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝড় হওয়ার পর থেকে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়।

বরুড়ার খোশবাস, আগানগর, শিলমুড়ি দক্ষিণ, মহেষপুর এলাকায় শুক্রবার ও শনিবার বিদ্যুৎ ছিল না। মুরাদনগরের শ্রীকাইল, মেঘনার একাংশ, দাউদকান্দির ইলিটগঞ্জ, লালমাইয়ের পেরুল, চৌদ্দগ্রামের শুভপুর, উজিরপুর, জগন্নাথদিঘি, মুরাদনগর পাহাড়পুর, কালামুহুরি, আন্দিকোট, নাঙ্গলকোটের দৌলখাড়, পেরিয়া, মেঘনার রাধানগর, লাকসাম গোবিন্দপুর, সদরের পাঁচথুবী, বুড়িচং বাকশিমুল এলাকায় গত শুক্রবার বিদ্যুৎ ছিল না।

বরুড়া আদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বলেন, কারেন্ট নেই, চাল ও ভাতা কার্যক্রমের তালিকা করা যায়নি। এ তালিকা আবার মেইলে পাঠাতে হবে। গত দুই দিন আদ্রাসহ বরুড়ার মহেষপুর, শিলমুড়ি, আড্ডা এলাকায় কারেন্ট নেই।

সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু মন্তব্য করেন, বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিদের বাসার বিদ্যুতের লাইনে বিভ্রাট হয় না, যদিও হয় তা দ্রুত সমাধান করা হয়। সাধারণ নাগরিকরা মোবাইলে অভিযোগ করেও তা সমাধান করতে পারে না।

পল্লী বিদ্যুতের বরুড়া জোনাল অফিস উপ মহাব্যবস্থাপক মো. আবুল বাসার জানান, বরুড়াতে সমস্যাটা খুব বেশি হয়েছে। ৮টি খুঁটি ভেঙে গেছে। প্রায় স্থানে গাছ বৈদ্যুতিক তারের উপর পড়ে ছিলো। প্রতিটি খুঁটি চেক দিয়ে লাইন দিতে হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে গাছ কাটার ডে-লেবার পাওয়া যায়নি। ১৪-১৫ জন লাইনম্যান আছেন তারা উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত গিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সকাল থেকে বিরতিহীনভাবে কাজ চলছে। প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। কিছু স্থানে বিকল্প লাইন দেয়া হয়েছে।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাগমারা এলাকার কয়েকটি গ্রামে ঘর-বাড়ির কিছু খুঁটি ভেঙে ছিলো। লাইন ঠিক করে, সংযোগ দেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কোথাও সমস্যা থাকে, আমাদের অবগত করলে, আমরা তা ঠিক করে দিচ্ছি। অভিযোগ নম্বরে যে ক’টি কল এসেছে, তা সমাধান করা হয়েছে।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু এলাকায় এ সমস্যাটি হয়েছে। সমাধানের চেষ্টা করেছি। এখন আর কোথায় সমস্যা নেই।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মজিদ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই টিভির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। বিদ্যুৎ সমস্যা বা যাদের বাসায় টিভি নেই, তারা ইন্টারনেটযুক্ত যে কোনো মোবাইল ফোনে কিশোর বাতায়ন থেকে এ ক্লাসের ভিডিও দেখতে পারবে।

আরো পড়ুন