কুমিল্লায় খালে বাঁধ দিয়ে চেয়ারম্যানের মাছ চাষ, ৩০০ কৃষকের জমি জলাবদ্ধ

ডেস্ক রিপোর্টঃ খালের সেতুর নিচে পাকা বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়নের কাটাখালি খালের সেতুর নিচে পাকা বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক সরকার আব্বাসীর বিরুদ্ধে। এতে ওই এলাকার ৫ গ্রামের ৩০০ কৃষকের প্রায় ৫ শ’ বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

এক সময় এলাকার জেলেরা এই খালে মাছ ধরে বিক্রি করতো এবং এলাকাবাসী মাছ ধরে নিজেদের মাছের অভাব মিটাতো। কিন্ত গত তিন বছর ধরে চেয়ারম্যান ফারুক সরকার বাঁধ দিয়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে নিজে মাছের চাষ করে বিক্রি করছেন। এখন আর অন্য কেউ খালে মাছ ধরতে পারে না।

এছাড়া প্রবাহিত সরকারি খালে ইট, সুরকি ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা বাঁধ দিয়ে মাছের প্রজেক্ট করায় ওই এলাকার ৫ গ্রামের ৩শ‘ জন কৃষকের প্রায় ৫ শ’ বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ কারণে তারা তাদের জমিতে কোনো ফসল করতে পারছে না। অথচ বাঁধ দেয়ার আগে এসব জমিতে কৃষকরা আমন ধান, মরিচ, গম, মসুরসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করতেন। এতে তাদের বছরের খাবারের যোগান হয়েও বাজারে বিক্রি করতে পারতেন।

স্থানীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান ফারুক সরকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের মাসিক সভা না ডেকে পরিবর্তে রেজুলেশান করে খাতাতে সদস্যদের জোর করে স্বাক্ষর নেন।

টি আর, কাবিখা, এলজিএসপি, এডিপি, ভিজিএফ ইত্যাদি প্রকল্পের কাজে সদস্যদের সাথে সমন্বয় না করে একক সিদ্ধান্তে ভুয়া প্রকল্প গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া চেয়ারম্যান ফারুক পরিষদ ভবনে মাসিক সভা না করে নিজ বাড়িতে দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করার অভিযোগও করছেন তার পরিষদ সদস্যরা।

ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান ফারুক সরকার আব্বাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভাওরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণলয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, জেলা প্রসাশক কুমিল্লা ও মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লা মিয়া রতন সিকদার বলেন, “ব্যক্তিগত স্বার্থে প্রবাহমান খালের ওপর অবৈধভাবে বাঁধ দেয়ার কোনো বিধান নাই। জনগণের ক্ষতি হয় এমন কাজ মেনে নেয়া হবে না। এই বাঁধ অপসারণের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

চেয়ারম্যান ফারুক সরকারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

আরো পড়ুন