কুমিল্লায় প্রথম আলোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রথম আলো’তে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে কুমিল্লাবাসী। সোমবার রাতে নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ করেছে জেলা ছাত্রলীগ।

রাত সাড়ে ৭টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক এম রুবেল হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ শেষে প্রথম আলো পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এসময় তারা বলেন, এ সংবাদের মাধ্যমে কুমিল্লাবাসীকে অপমান করা হয়েছে। তাই পত্রিকাটির সম্পাদককে কুমিল্লাবসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

সংবাদটির জন্য অবিলম্বে ক্ষমা না চাইলে আইনের আশ্রয়ের ঘোষণা দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে একই দাবিতে প্রথম আলো পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ করেছেন কুমিল্লা বারের তরুন আইনজীবীরা। তাদের অভিযোগ বিপিএলে ঢাকা-কুমিল্লা ফাইনালের দিন প্রথম আলো পত্রিকা অপমানজনক ভাবে কুমিল্লাকে ‘কটাক্ষ’ করে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গনে প্রথম আলোর কপিতে অগ্নিসংযোগ করেন কয়েকজন আইনজীবী।

এসময় তারা ওই সংবাদের প্রতিবেদক ও প্রথম আলোর সম্পাদককে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানান। তা না করলে তারা মানহানির মামলা দায়ের প্রস্তুতি নেবেন বলেও জানান তারা।

এদিকে গত শুক্রবার বিপিএল ফাইনাল নিয়ে প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রকাশিত সংবাদের একটি অংশের কাটিং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদটির মাধ্যমে কুমিল্লাকে ‘কটাক্ষ’ করা হয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ এনে সংবাদের কাটিং ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

তবে রবিবার দিবাগত রাতে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদক তারেক মাহমুদ। তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোষ্টের মাধ্যমে এ সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

তিনি বলেন সম্পূর্ণ সংবাদটি পড়লে পাঠকদের ভুল ধারনা দূর হবে। নিচে কুমিল্লার বার্তা’র পাঠকদের জন্য তার লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

খুবই অনাকাঙ্খিত এক পরিস্থিতিতে এই লেখা লিখছি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিপিএলের ফাইনালের দিন প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রকাশিত আমার লেখা ‘এক ফাইনালে অনেক লড়াই’ শিরোনামের প্রিভিউর কিছু অংশকে কুমিল্লার পাঠকদের কেউ কেউ সহজভাবে নিতে পারেননি।

তারা ভাবছেন লেখায় আমি কুমিল্লাকে অপমান করেছি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কিছু লেখা হচ্ছে, ইনবক্সে মেসেজ পাঠিয়ে ব্যক্তিগতভাবেও আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে।

অথচ ঢাকার সঙ্গে কুমিল্লার তুলনার অংশে আমি বোঝাতে চেয়েছি, রাজধানীর শৌর্য-বীর্যের সঙ্গে কুমিল্লার তুলনা নাও চলতে পারে। কিন্তু বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ঠিকই ঢাকা ডায়নামাইটসের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারছে। আর কিছুতে না হোক, অন্তত এই একটা জায়গায় তারা ঢাকাকে হারানোর সাহস দেখাচ্ছে।

ঢাকার সঙ্গে কুমিল্লার এই তুলনার মাধ্যমে কুমিল্লাকে অপমান করার কোনো উদ্দেশ্যই ছিল না। তারপরও যে লেখায় আমি এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং ফাইনালে তাদের ইতিবাচক সম্ভাবনাকে উঠিয়ে আনতে চেয়েছি, কুমিল্লার কোনো মানুষ সেটিকেই এভাবে ভুল বুঝলে, তা আসলে আমারই দুর্ভাগ্য। আমিই হয়তো আমার বক্তব্য পুরোপুরি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি।

সবচেয়ে খারাপ লাগছে এই কারণে যে, আমিও কুমিল্লার সন্তান। কুমিল্লাতেই কেটেছে আমার শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য। যারা আজ বলছেন, আমার লেখায় কুমিল্লাকে অপমান করা হয়েছে, তাদের মতো আমিও কুমিল্লাকে ভালোবাসি। সাংবাদিক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাকে নিরপেক্ষ থাকতে হয়। তবু কুমিল্লার জন্য, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জন্য গোপন একটা টান তো থাকেই।

এত কিছুর মধ্যেও অনেকেই লেখাটিতে দেওয়া আসল বার্তাটি বুঝেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি জানিয়েছেন। আমাকে ফোন করে লেখার প্রশংসা করেছেন। তাদের ধন্যবাদ।

আমি সবার জন্যই এখানে ‘এক ফাইনালে অনেক লড়াই’ শিরোনামের লেখাটি পোস্ট করলাম। আশা করবো, পুরো লেখাটিই আপনারা পড়বেন। তাতেও যদি কারও মনে আঘাত থেকে যায়, তাহলে সেটি আসলেই আমার দুর্ভাগ্য।

আরো পড়ুন