কুমিল্লায় মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সা,ইজিবাইকের নিরাপদে চলাচল

মো.জাকির হোসেন: সরকার মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা নিষিদ্ধ করেছে দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে ৩ বছর। কখনো মহাসড়কে চলাচলের বৈধতা পায়নি ইজিবাইক। আর এই আইনকে পূজিঁ করে প্রতিনিয়ত হাইওয়ে পুলিশ যখন-তখন ধাওয়া করে আটকে নিজেরাই চালিয়ে নিয়ে আটকে দিচ্ছে এসকল বাইক। চালকরা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কখনো অনুণয়-বিণয়। একসময় বাধ্য হয়ে উৎকোচ দিয়ে ছাড়িয়ে নিচ্ছে আটক হওয়া ইজিবাইক বা অটোরিকশা। এই যখন চিত্র ছিল সাম্প্রতিক সময়ের, গত দু’দিনে সেটা আবার বদলে গেছে। মহাসড়কের পুরোটা জুড়ে শুধুই অটোরিকশা আর ইজিবাইক। এতোদিনে মনে হয় জনতার বিজয় হলো! অর্থাৎ কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছতে ইজিবাইক বা অটোরিকশাযোগে যেতে পুলিশ বাধা দিচ্ছেনা। তাহলে কি নিষিদ্ধ এসকল যান বৈধতা পেল মহাসড়কে চলাচলে! দেশের প্রধান জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার শত কিলোমিটার অংশজুড়ে এখন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের মূল বাহন সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক।

দেশের প্রধান জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে থ্রি-হুইলার সিএনজি অটোরিক্সা নিষিদ্ধ ঘোষনার পর হাইওয়ে পুলিশ খুবই কঠোর ছিল চলাচল বন্ধে অটোরিকশা। পাশাপাশি ব্যাটারীচালিত ইজিবাইক কখনোই অনুমতি না থাকায় সীমিতভাবে চলাচল ছিল মহাসড়কে। পরবর্তীতে সরকারীভাবে নিষিদ্ধের পর প্রতিনিয়ত হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কের আশপাশ এলাকা থেকেও প্রতিদিন ধরে নিয়ে গেছে অটোরিকশা, ইজিবাইক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিএনজি, ইজিবাইকের চালকরা জানান, প্রতিনিয়ত আতঙ্কিত থাকতে হতো কখন ঝাপটা মারবে হাইওয়ে পুলিশ। আর সেই ঝাপটায় আটকে গেলে গুনতে হবে নগদ ১/২/৩/৪ হাজার টাকা। এজন্য কিস্তিতেও টাকা আনতে হয় ওইসব বাহনের চালকদের। এরবাইরে হাইওয়ে পুলিশের বর্বরতা উল্লেখ না করলেই নয়, যখন তখন ধাওয়া করে হাতে থাকা লাঠির আঘাতে ভেঙ্গে ফেলছে ইজিবাইকের গ্লাস, মিটার। গাড়ি বাঁচাতে প্রাণ নিয়ে পালাতে গিয়ে কখনো দুর্ঘটনাকবলিত হচ্ছে। অথচ, ইজিবাইক, সিএনজি স্বল্প দুরত্বে চলাচলকারী এমুহুর্তেও অন্যতম প্রধান দুটি বাহন। গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘন্টা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সারাদেশে ৮ দফা দাবীতে কর্মবিরতি শুরু করে। এরপর থেকে স্থবির হয়ে পড়ে সারা দেশ। মানুষ কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌছতে ব্যাকূল হয়ে উঠে। বিকল্প হিসেবে রেলপথকে বেছে নেয় অনেকে। তবে সবজায়গাতে রেলপথ না থাকায় মানুষ বাধ্য হয়ে স্বল্প দুরত্বের পাশাপাশি দুরের পথেও বেছে নেয় সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক। গত রোববার ও সোমবার মহাসড়কে দেখা গেছে সেই চিত্র। মহাসড়কে কথা হয় মনির, জুলহাস, মানিকসহ একাধিক ইজিবাইক চালকের সাথে। তাদের কথার সারমর্ম ছিল, দু’দিনের অবরোধের সুযোগে অনেক বেশী আয় করেছেন তারা।

হারুন নামের এক ইজিবাইক চালক বললেন, রোববার আধা বেলা চালিয়ে আয় করেছি ২৭’শ টাকা। মন্দ ছিলনা সোমবারও। এদিন সে আয় করে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা থেকে কুমিল্লা শাসনগাছা, নিমসার, কংশনগর বা পদুয়ারবাজার যেতে যেখানে সর্বোচ্চ ২০ টাকা খরচ হতো, গত দু’দিন সেটা বেড়ে ৫০/৬০ টাকা হয়েছে। এছাড়াও ইজিবাইক যেখানে স্বল্প দুরত্বে যাতায়াতের অন্যতম বাহন ছিল। পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের দু’দিনের অবরোধের সময় ইজিবাইক কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রাম, চাঁদপুর, হাজিগঞ্জসহ বিভিন্নস্থানে যাত্রী বহন করেছে। এজন্য নির্ধারিত ভাড়ার কয়েক গুণ বেশী টাকা দিতে হয়েছে সাধারন মানুষদের। এদিকে এই যখন মহাসড়কের চিত্র ছিল। তখন হাইওয়ে পুলিশ ছিল একেবারেই নিরব, তবে মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে নব্য চাঁদাবাজদের। অন্যান্য দিনের মত মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে গত দু’দিন ইজিবাইক থেকে চাঁদাবাজি করেছে ওইসব নব্য চাঁদাবাজরা। একাধিক ইজিবাইক চালক বলেন, গত দু’দিন শুধু চাঁদাবাজরাই আমাদের থেকে টাকা নিয়েছে। গাড়ি আটকের ভয়ে আতঙ্ক থাকতে হয়নি।

আরো পড়ুন