কুমিল্লায় মেয়েকে স্কুলে ভর্তি না করেই শিক্ষাভাতা উত্তোলন

সাইয়িদ মাহমুদ পারভেজঃ মেয়েকে স্কুলেই ভর্তি করাননি অথচ তার নামে শিক্ষাভাতা উত্তোলন করে আসছেন সরকারি কর্মচারী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জে এল শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর। বিষয়টি গত কয়েকদিন ধরে কুমিল্লার সরকারি কর্মচারীমহলে আলোচনার ঝড় তুলেছে।

শুধু সন্তানের নামে ভাতাই উত্তোলন করছেন না মোস্তাফিজুর রহমান, ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া তার এক মেয়েকে চলতি বছর বদলির অবৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। মেয়েটি তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেছিল।

জানা যায়, মোস্তাফিজুর রহমান বুড়িচং উপজেলা পরিষদ থেকে কয়েক বছর আগে বদলি হয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগ দেন।

জানা যায়, সরকার কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাভাতা প্রবর্তন করার পর মোস্তাফিজুর রহমান তার দুই মেয়ের নামে শিক্ষাভাতা উত্তোলন করছেন। তার বড় মেয়ে এ বছর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট মেয়ের বয়স যখন এক বছর তখন থেকেই তিনি তার নামে শিক্ষাভাতা উত্তোলন শুরু করেন। এখন ওই মেয়ের বয়স তিন বছর। এখনো তার নামে ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে। ছোট এই মেয়েকে নিয়ে মোস্তাফিজুর অফিসে এলে তাকে দেখে সহকর্মীরা প্রশ্ন তুলেন। এভাবেই বিষয়টি জানাজানি হয়।

এ ব্যাপারে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোমিনুল হক বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান দুই মেয়ের নামেই ভাতা নিচ্ছেন। ওই ভাতা প্রদানকারী কর্মচারী আবদুল মোমিন বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান দুই মেয়ের নামে শুরু থেকেই ভাতা নিচ্ছেন। মেয়েদের বয়স কত, তা আমাদের জানা নেই।

এ ব্যাপারে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বড় মেয়ে ক্লাস ফাইভে পড়ে। ছোট মেয়ে এখনো কোনো স্কুলে ভর্তি হয়নি। তারপরও শিক্ষাভাতা উত্তোলন করার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, দুই মেয়ের নামেই ভাতা নিচ্ছি। আগামী বছর ছোট মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাব। এটা অবৈধ বা অন্যায় কিনা, এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি চুপ থাকেন।

বদলির অবৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে কুমিল্লা নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে তিনি বলেন, শুধু আমার মেয়ে কেন? আরো কয়েকজন বদলির কাগজ দেখিয়ে ভর্তি হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, বদলির আদেশ দেখিয়ে মেয়েকে এ স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

এ ব্যাপারে কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আজিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরো পড়ুন