কুমিল্লায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী গুমের অভিযোগ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের দৌলখাঁড় ইউনিয়নের অষ্টগ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে গুমের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার ঈদ কেনাকাটার নামে স্ত্রী আয়েশাকে তার পিতার বাড়ি থেকে নেওয়ার সাতদিন পরও কোন সন্ধ্যান মেলেনি। এ ঘটনায় একই দিন নিখোঁজের মা সীমা আক্তার নাঙ্গলকোট থানায় সাধারণ ডায়রি দায়ের করেছেন ।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের শেষ দিকে উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের অষ্টগ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় দেওভান্ডার গ্রামের আয়েশা আক্তারের। বিয়ের ৩ মাস পর তার স্বামী প্রবাসে চলে যান। স্বামী প্রবাসে যাওয়ার পর থেকে শ্বশুর শাশুড়িসহ স্বামীর পরিবারের লোকজন সব সময় নানা ভাবে যৌতুকের জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করেন। আয়েশার প্রবাসী বাবা মেয়ের সুখের জন্য তাদের অনেক অন্যায় আবদার পূরণ করেন।

সর্বশেষ প্রবাস থেকে মোবাইল ফোনে শাশুড়ির কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে জামাই জাহাঙ্গীর। এ টাকা দিতে না পারায় দীর্ঘদিন ধরে আয়েশার উপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে প্রবাসে ১ বছর থেকে গত ৩ মাস আগে দেশে এসে আয়েশার ৫ ভরি স্বর্ণের গহণা বন্ধক দেয়ার কথা বলে স্বামী জাহাঙ্গীর নিয়ে যায়।

এর পর গত ৮ মে শুক্রবার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন আয়েশা। পরে গত রবিবার সকালে স্বামী ঈদের কেনাকাটা করে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়ার পর ৭ দিন যাবৎ আয়েশা নিখোঁজ রয়েছে। এ ব্যাপারে আয়েশার পরিবারের লোকজন স্বামী জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করলে সে আয়েশাকে তার পিতার বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে যায় বলে জানান। আয়েশার কোন খোঁজ না পেয়ে অজানা আশঙ্কায় তার পিতার বাড়িতে চলছে আহাজারী।

আয়েশার প্রবাসী পিতা আনোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘না জানি আমার মেয়েটাকে তারে মেরে গুম করে ফেলেছে কি-না। আমি প্রশাসনের কাছে আমার মেয়ে উদ্ধারে সহযোগীতা কামনা করছি।’

নিখোঁজ আয়েশার মাতা সীমা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েটাকে যৌতুকের জন্য অনেক নির্যাতন করেছে। তার স্বর্ণ গহণা ও মোবাইল ফোন সব নিয়ে গেছে। সবশেষে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে টাকা দিতে না পারায় ঈদের কেনাকাটার কথা বলে আমার মেয়েটিকে আজ ৭ দিন কোথায় রেখেছে আমরা জানিনা। আমি প্রশাসনের কাছে আমার মেয়ের সন্ধান চাই।’

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্থানীয় দৌলখাঁড় বাজারে কেনাকাটা শেষ করে তার বাবার বাড়ীর সামনে আমার স্ত্রীকে নামিয়ে দিয়ে আসি, এর পর আমি আর কিছু জানিনা।’

সাধারণ ডায়রির তদন্ত কারী কর্মকর্তা নাঙ্গলকোট থানার এ এস আই আব্দুল কাদের বলেন, ‘আয়েশাকে খোঁজাখুজি অব্যাহত আছে। এখনো কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।’

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

আরো পড়ুন