কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে  চৈত্রসংক্রান্তিতে পিঠা উৎসব  

মাহদী হাসান: হেমন্তের সোনা ঝড়া মাঠ ফসল কাটার শেষে যখন রিক্ত শূন্য হয়ে যায় তখনি বুঝা যায় শীত আসছে আর শীতের আগমন বাহারী রকমের রসনা পিঠায় মৌ মৌ করা আবহমান বাংলার শত বছরের ইতিহ্যকে চিরায়ত করে। কৃষকের নবান্ন ফসল আর শীত মৌসুমে খেজুর রসের সাথে রসনা পিঠার স্বাদ যেন অধীর অপেক্ষার প্রাপ্তি। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের দিনে হাজার বছরের ঐতিহ্যের পিঠা উৎসব বাঙ্গালীর ঘরে ঘরে যেন নিমন্ত্রণ ছড়িয়ে দেয়। এ যেন শ্বাশত বাংলার চিরচেনা প্রতিচ্ছবি। এই ঐতিহ্যকে লালন করে বিগত দিনের ন্যায় দক্ষিণ পূর্ব বাংলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ আয়োজন করে পিঠা উৎসব ২০১৯।

সকাল সাড়ে ৯ টায় উৎসব মুখর পরিবেশে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা পিঠা উৎসব উদ্ভোধন করেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান। শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক প্রফেসর বিজয় কৃষ্ণ রায়, যুগ্ম-সম্পাদক নিলুফার সুলতানা, বদরুন নাহার, কোষাধ্যক্ষ ওয়ায়েছ আলকারনী মুন্সী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টলে পিঠার পসরা সাজিয়ে বিতরণ ও প্রদর্শন করেন। নবাব ফয়জুন্নেসা হল, বাংলা বিভাগ ইংরেজি বিভাগ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগ উৎসবটি উদযাপনে ভূয়োসী প্রশংসার দাবী রাখে।

স্টলগুলো ঘুরে দেখা গেলো বাঙালি ঐতিহ্যের নানা রকম পিঠা ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, মাংস পিঠা, নকশা, পাকন, শামুক, ডিম প্রভৃতি পিঠার সমাহার। উৎসবে শিক্ষার্থীদের স্টলের পিঠার সমাহার যেমন ঠিক তেমনি স্টলের নামও বৈচিত্রতময় যেমন রংধনু পিঠাঘর, এ.ইউ.এস.টি পিঠা ঘর, রসের হাঁড়ি, পিঠা বিলাস, হাও-মাও পিঠা খাও, মিঠাই ঘর, নবান্ন পিঠা, পৌষালী পিঠাওয়ালা, প্রজাপতি ইত্যাদি। উদ্ভোদকের বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা বলেন, পিঠা উৎসব ভিক্টোরিয়া কলেজে অনেক হয়েছে, তবে চৈত্রসংক্রান্তি নিয়ে পিঠা উৎসব ১২০ বছরে কলেজের ইতিহাসে এটাই প্রথম। একদিনের প্রস্তুতিনিয়ে এতো সুন্দর অায়োজনে ্আমরা খুশি।

নবাব ফয়জুনেসা হল প্রথম, বাংলা বিভাগ দ্বিতীয়,  ইংরেজি ও ইসলিমের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগ যৌথ ভাবে তৃতীয় হয়েছে।

পিঠা উৎসব এর আয়োজক শুধু শিক্ষার্থীরা হলেও সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের সমাগমে উৎসব প্রাণচাঞ্চল্যতা পায়। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা বাঙ্গালী এটা আমাদের প্রানের উৎসব। এটাই আমাদের সংস্কৃতি। কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান স্যার বলেন, আমার কাছে খুব ভালো লাগে এমন উৎসবে অংশগ্রহণ করতে। ক্যাম্পাসে এ রকম উৎসবে সবার সঙ্গে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। ষড়ঋতুর এ দেশে শীত অন্যরকম এক ঋতু। আর এ শীতেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। শহুরে সমাজে সেই ঐতিহ্যের ধারা কিছুটা মলিন হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের এমন পিঠা উৎসবের আয়োজন বাঙালি ঐতিহ্য ও রীতি-নীতিকে কিছুটা মনে করিয়ে দেয়। পিঠা উৎসবের এ আয়োজনে প্রথম স্থান অর্জন করেন নবাব ফয়জুন্নেসা হল, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন বাংলা বিভাগ ও সম্মিলিতভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন ইংরেজি ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগ।

মুক্তমঞ্চে দিনব্যাপী এ আয়োজনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ, ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার এবং  নোংঙ্গর সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহন ছিলো মনোমুগ্ধকর।

আরো পড়ুন