কুমিল্লা মহাসড়কের পাশে সবজির হাট, জনদুর্ভোগ বাড়ছে

মো.জাকির হোসেনঃ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লার নিমসারে বছরের পর বছর জুড়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইজারাদাররা বাজার পরিচালনা করে আসছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই সবজির হাট মহাসড়কের পাশে পরিচালিত হওয়ায় এখানে প্রতিদিনই সৃষ্ট হচ্ছে যানজট। ফলে চালক,যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে নিয়মিত। তবে অনিয়মের বিষয়টি চোঁখে পড়ছেনা স্থানীয় প্রশাসনের । এদিকে সম্প্রতি যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সারা দেশে মহাসড়কের পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও ঘোষনার পর আবারো নতুন করে সাধারণ মানুষ আশায় বুক বেধেছে মহাসড়কের পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের।

দেশের প্রধান জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের নিমসারে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির হাট। এখানে রয়েছে একটি কলেজ,৩’টি হাই স্কুল,দু’টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ,একাধিক কিন্ডারগার্টেনসহ বেশ কয়েকটি বিভিন্ন মাধ্যমের মাদ্রাসা। এরবাইরে রয়েছে ৫টি বানিজ্যিক ব্যাংকসহ আরো অনেক এনজিও। প্রতিদিন মহাসড়কের দু’পাশজুড়ে থাকা এসব শিক্ষা ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী,শ্রমজীবি ব্যস্ত সময় পার করে। দ্রুতগতির মহাসড়ক পারাপাওে এতে প্রায়ই দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে হতাহত হচ্ছেন অনেকেই। সবচেয়ে বেশী সমস্যার সৃষ্টি করছে নিমসার এলাকায় মহাসড়কের দু’পাশে শত শত সবজির আড়তের কারণে।

সরেজমিন নিমসার এলাকা ঘুরে পাওয়া তথ্য ও চিত্রে দেখা যায়,দেশের ব্যস্ততম প্রধান জাতীয় মহাসড়কের পাশে দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির বাজার সরকারীভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া হলেও দেখা যাচ্ছে কোনভাবেই বাজারটির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই প্রশাসনের। সরকারীভাবে নির্ধারিত জায়গা বরাদ্দের পরও অজ্ঞাত কারণে শত শত ব্যবসায়ী মহাসড়কের দু’পাশে অবৈধভাবে অস্থায়ী দোকান নির্মান করে বছরের পর বছর ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এঅবস্থায় প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত নিমসার এলাকায় সৃষ্ট হচ্ছে থেমে থেমে যানজন। মহাসড়কের পাশে থাকা আড়তে রাত বাড়ার সাথে সাথে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে শত শত ট্রাক,কাভার্ডভ্যান যোগে বিভিন্ন মৌসুমী ও বারোমাসী তরিতরকারী নিয়ে আসছে পাইকাররা।

একইভাবে বুড়িচং,চান্দিনা ,দাউদকান্দি,তিতাস,হোমনা,সদর দক্ষিণ,লালমাই,বরুড়া, লাকসাম,দেবিদ্বার,মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্নস্থানে উৎপাদিত শাকসবজি নিয়েও স্থানীয় কৃষকরা আসছে বাজারে বিক্রির জন্য। পাশাপাশি শত শত পাইকার আসে বাজারে তরকারী ক্রয়ের জন্য। প্রথমেই দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা সবজিগুলো আড়তে নামানো হয়। এরপর বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠা আড়ত থেকে কিনে নিয়ে আবারো সড়কের উপর যানবাহন রেখে সেগুলোতে তরকারী বোঝাই করে কুমিল্লার বিভিন্নস্থান ছাড়াও আশপাশের ফেনী, নোয়াখালী, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, চাঁদপুর, লক্ষিèপুর,ঢাকা,মুন্সিগঞ্জ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। এসময় যানবাহনছাড়াও শত শত পাইকার,খুচরো ব্যবসায়ীদের ভীড়ে মহাসড়কে যানচলাচ্যল বাধাগ্রওস্থ হয়ে পড়ে। গতি কমাতে বাধ্য হয় ব্যস্ততম মহাসড়কে চলাচলকারী দ্রুতগতির বাস,ট্রাক,কাভার্ডভ্যাম,প্রাইভেটকার,মাইক্রোবাস। কখনো কখনো ঘটছে দুর্ঘটনাও। হতাহত হচ্ছে অনেকেই। এই যখন অবস্থা তখন প্রশাসন একেবারেই নিরব।

অভিযোগ রয়েছে ২০১৫ সালের নভেম্বরে মহামান্য হাইকোর্ট মহাসড়কের পাশে অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদের নিষেধাজ্ঞা দিলেও অজ্ঞাত কারণে সেটা এখনো কার্যকর হয়নি। মহাসড়কের পাশে বাজার পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে নিমসার বাজারের একজন ইজারাদার সামসুল হক মুন্সি বলেন,সরকার নির্ধারিত স্থানে আমরা বাজার পরিচালনা করছি। কেউ কেউ মহাসড়কের পাশে ব্যবসা করছে,তাদের সরকার নির্ধারিত স্থানে আসার কথা বললেও অজ্ঞাত কারনে তাতে সাড়া পাচ্ছিনা।

বুড়িচং উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার বলেন, আমরা দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

আরো পড়ুন