কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় যুবরাজকে দেখতে গেলেন চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় অসুস্থ সিংহ যুবরাজকে দেখতে গেলেন চিকিৎসকরা। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নান ও ভ্যাটেরিনারি সার্জন ডা. নাজমুল হক এর নেতৃত্বে ৪সদস্যের একটি দল অসুস্থ সিংহটিকে দেখতে যান।

মঙ্গলবার বিকেলে চিকিৎসকরা সিংহটির খোঁজখবর নেন এবং পরামর্শ দেন।

যুবরাজ কেমন আছে, ভালো নেই! এ খবর জানতে মঙ্গলবার দিনভর দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল কুমিল্লা চিড়িয়াখানায়। কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রধান আকর্ষণ একমাত্র সিংহ যুবরাজ। ২০০৪সালে সিংহটি চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় আনা হয়। ২০০১সালে জন্ম নেয়া যুবরাজ এখন নুয়ে পড়েছে বার্ধক্যে। বেশ কয়েক বছর অসুস্থ থাকলেও এখন তার শারীরিক অবস্থা খুব ভালো নেই। সম্প্রতি যুবরাজের বিশ্রামরত একটি ছবি ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, একটি বিড়াল যুবরাজের পিছনে শুয়ে আছে।

দর্শনার্থী মাসুম বিল্লাহ ভূইয়া জানান, এখানে যখন সিংহটি আনা হয় তখন এর গর্জন শোনা যেত দূর থেকে। কিন্তু  সেই যুবরাজ এখন নেতিয়ে গেছে। এর পাশেই বিড়াল বসে থাকে যা সত্যিই আমাদের ভাবায়।

দর্শনার্থী ফাহিম বলেন, গত কয়েকদিন ফেসবুকে যুবরাজের ছবি এতোটাই আলোচিত হচ্ছে যে সিংহটিকে দেখতে এলাম। এমন একটা পরিবেশে তাকে রাখা হয়েছে যেন দোযখ। ঠিকমতো খাবার দেয়া হয় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে, তাছাড়া নামমাত্রই এর চিকিতসা চলে।

মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যুবরাজ বসে আছে। পাশে এর দেখভালের দায়িত্বে থাকা শাহআলম তাকে দাড় করানোর জন্য ডাকাডাকি করছেন, কিন্তু তাতে সাড়া নেই যুবরাজের। পরে উপর থেকে পানি দিলে যুবরাজ উঠে দাড়ায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তা জায়গা বদল করে বসে পড়ে।

যুবরাজ এখন খায়না এবিষয়ে জানতে চাইলে ভ্যাটেরিনারি সার্জন ডা. নাজমুল হক বলেন, গত ২বছর ধরে যুবরাজ ঠিকমতো খাবার খাচ্ছে না। প্রথম থেকেই তাকে গরুর মাংস দেয়া হতো রুচি বদলানোর জন্য দৈনিক ৩কেজি মোরগির মাংস দিতে বলেছি।

যুবরাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা শাহআলম বলেন, দৈনিক ৬কেজি গরুর মাংস ও ৩কেজি মুরগির মাংস যুবরাজের জন্য বরাদ্দ থাকলেও এখন তার সামনে খাবার পড়ে থাকে।

ডা. নাজমুল হক বলেন, সাধারনত সিংহের গড় আয়ু ১৪বছর। সিংহটি তার বার্ধক্য সময় পাড় করছে।

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনটি যিনি ইজারা নেন তার দায়ীত্ব থাকে প্রানীগুলোর খাবার ব্যবস্থাপনার। এসব তত্বাবধানের জন্য একজন নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন আরও একজন পশুগুলোর খাবার সরবরাহ করেন।

মারুফ আহমেদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ৬কেজি গরুর মাংসের দাম ৩হাজার টাকা, ৩কেজি মুরগির মাংসের দাম ৪৫০টাকা হিসেবে বছরে ১২লাখ ৫৯হাজার ২৫০টাকা হয়। অথচ একবছরের ইজারা নেয়া হয়েছে ৮লাখ টাকায়। তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যুবরাজকে লোকসান দিয়ে ইজারাদার খাবার দিবেন কি! এটা কতটুকু সত্য! এরচেয়ে ভালো জেলা পরিষদ তার জন্য একটি ফান্ড তৈরী করে পশুগুলোর খাবার দেয়া। সব দেখে মনে হচ্ছে মুখে এক আর কাজে ভিন্ন এভাবেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে যুবরাজকে।

আরো পড়ুন