কুমিল্লায় কবিরাজের পানিপড়া আনতে গিয়ে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী

দেবিদ্বারে মাদ্রাসায় নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক কিশোরী(১৫) কবিরাজের কাছ থেকে পানিপড়া আনতে গিয়ে এখন ৮ মাসের অন্তস্বত্বা। ঘটনাটি ঘটে প্রায় ৮ মাস পূর্বে দেবিদ্বার উপজেলার ভাণী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের মৃত; কবিরাজ জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া (মেইকার)’র পুত্র কবিরাজ মো. ইকরাম হোসেন কানন ভূঁইয়ার বসত বাড়িতে। ঘটনার পর বিষয়টি কাউকে না জানাতে কবিরাজ বলেছিল, জানালে গুম-খুণ সহ নানাভাবে ক্ষতি করার হুমকি দেয়া হয়েছিল বলে শারিরিক প্রতিবন্ধী ভিক্টিম কিশোরী জানিয়েছে। ৮ মাসের অন্তস্বত্বা ওই কিশোরী এখন সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবীতে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন সাহারপাড় গ্রামের দরিদ্র এক কৃষকের কণ্যা এবং ‘সূর্যপুর দাখিল মাদ্রাসা’র ১০ শ্রেণীর ছাত্রী (১৬) তার প্রেমিককে বসে রাখতে পানিপড়া আনতে পাশ্ববর্তী সূর্যপুর গ্রামের কানন কবিরাজের কাছে যায়। ওই কিশোরী(১৬) কানন কবিরাজের কাছে যাওয়ার সময় তার প্রতিবেশী আপন খালাতো বোন একই মাদ্রাসায় পড়ুয়া নবম শ্রেণীর ছাত্রী(১৫)কে নিয়ে যায়।

কানন কবিরাজ দশম শ্রেণীতে পড়ুযা কিশোরী(১৬)কে পানিপড়া দিয়ে পাশের ড্রইংরোমে বসতে বলে তার খালাতো বোন(১৪)’র জন্যও পছন্দের বর পেতে পানিপড়া খাওতে পাশের রুমে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণপর ওই কিশোরী এসে তার খালাতো বোনকে জানায় কবিরাজ আমারতো সর্বনাশ করে ফেলেছে। তখন তার বোন জানায় কিছু হবেনা, কাউকে কিছু বলিস না।

কানন কবিরাজ বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক। অন্তস্বত্বা কিশোরীর মা’বলেন, আমার মেয়ে স্থানীয় সূর্যপুর দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণীতে পড়ে। তার জীবনে এরকম ঘটনা ঘটবে কখনোই ভাবিনি। গত রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে তার শরীরের অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনা জানতে পারি। প্রথমে বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করি, কবিরাজ পরিবারের পক্ষ থেকে সমাধানের আশা দেয়া হয়। তবে সাংবাদিক, থানা পুলিশ কিংবা আদালতের আশ্রয় নিলে বাড়িঘর জালিয়ে তাদের গ্রাম ছাড়া করারও হুমকী দেয়া হয়।

মো. নজরুল ইসলাম ভূইঁয়া জানান, ঘটনা মিমাংসার স্বার্থে তিন দফা শালিস ডাকা হয়। অভিযুক্ত ধর্ষক কবিরাজ কানন ভূঁইয়া কোন শালিসেই উপস্থিত থাকেনি। কবিরাজের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত গত ১৩ জুন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্তও মানছেনা। ধর্ষক কবিরাজ পলাতক থাকার অজুহাতে এবং বিপুল অর্থব্যয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার তালবাহানা শুরু করেছে।

গত ১৩জুন সাহাড়পাড় মো. আজহারুল ইসলাম মেম্বারের বাসভবনের ছাদের উপর ভাণী ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিসের সভাপতি ইউনিয়ন আ’লীগ’র সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি মেম্বার জহিরুল ইসলাম জানান, ওই সালিসে ১৩সদস্যের একটি জুরিবোর্ড গঠন করা হয়, জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬জুন অন্ত:স্বত্বা কিশোরীর অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি দানে কানন কবিরাজের সাথে বিবাহ বন্ধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি

আরো পড়ুন