কুমিল্লায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ৪০টি পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১নং বিপুলাসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে এলাকার অন্তত ৪০টি পরিবারের উপর হামলা, মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় ভুক্তভোগী ১১টি পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাইকচাইল গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহ জাহান পাটোয়ারী।

লিখিত বক্তব্যে মো. শাহ জাহান পাটোয়ারী জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উদ্বোধনের সময় তার ওপর হামলা চালায় ইকবাল ও তার বাহিনী।

তিনি বলেন, একই গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল মাহমুদ ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট যুবদলে যোগ দিলেও এক বছর যুবলীগে যোগ দিয়ে ইউনিয়ন যুব লীগের পদ ভাগিয়ে নেন। দলীয় পদ পেয়ে তারই নেতৃত্বে এলাকার আওয়ামী লীগ- যুবলীগ নেতাকর্মী ও তাদের পরিবার এবং এলাকার নিরীহ লোকজনের ওপর হামলা, মারধর, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর- অগ্নিসংযোগ, জমি দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, লুটসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি আজাদ হোসেন জানান, যুবলীগ নেতা ইকবাল তাকে একাধিকবার গুলি চালিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে ইকবালের লোকজন তাকে মারধর করে পা ভেঙে ফেলে।

নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ইকবাল তার ছেলে ইসমাইলকে দিয়ে মাদক ব্যবসা করালেও তিনি বাবা হিসেবে তাকে এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। যুবলীগ নেতা ও প্রবাসী নজরুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে ইকবাল গভীররাতে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী সালাহ উদ্দিন জানান, গত বছরের ১২ অক্টোবর মধ্যরাতে যুবলীগ নেতা ইকবালের নির্দেশে পুলিশ তাকে আটক করে চোখ বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন চালায় এবং ইকবালের বিরুদ্ধে এলাকায় কোনো অবস্থান নিতে পারবো না বলে হুমকি দেয়।চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সদস্য মমতাজ মিয়াসহ তার ৩ ছেলের ওপর হামলা ও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়।

রবিউল অভিযোগ করেন, ইকবাল ও তার লোকজন হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করেছে।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ইকবাল ও তার সহযোগীদের দ্বারা নির্যাতনের কাহিনি তুলে ধরেন একই গ্রামের, সেলিম গাজী, নুর আলম, নুর হোসেন ও মো. সুজন। তারা অভিযোগ করে আরও জানান, ইকবাল মাহমুদ ও তার সহযোগীদের নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। থানায় তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ৮টি মামলা ও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করে ভুক্তভোগীরা জানান, পুলিশের সাথে সখ্যতার কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।

ভুক্তভোগী এসব পরিবার অবিলম্বে ইকবাল মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কারসহ তাকে গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা ইকবাল মাহমুদ ফোনে জানান, তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সঠিক নয়। এতো অভিযোগ থাকলে তা ভুক্তভোগীরা দলের হাইকমান্ডকে জানাতে পারতো। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা এফআইআর হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সূত্রঃ জাগোনিউজ

আরো পড়ুন