কুমিল্লায় শুরু হচ্ছে আয়কর মেলা-২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান-‘আমরা সাবলম্বী হব, সকলে কর দেব’-কে প্রতিপাদ্য করে সারাদেশে মহাসমারোহে উদ্যাপিত হচ্ছে আয়কর মেলা- ২০১৭। প্রতি বছরের মতো এবারও কর অঞ্চল-কুমিল্লার উদ্যোগে- কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় আয়কর মেলা-২০১৭ উদ্যাপিত হবে। কর অঞ্চল-কুমিল্লার সদর দপ্তর কর ভবন প্রাঙ্গণে বুধবার হতে ৪ নভেম্বর শনিবার পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

বাংলাদেশের হাজার বছরের লোক সংস্কৃতির প্রাণ হচ্ছে মেলা ও পার্বন সমূহ। বাংলার চিরায়ত এ লোক সংস্কৃতিকে সমুন্নত রেখে আয়কর আহরণের মতো জটিল কাজটি মেলার মাধ্যমে করায় দেশের সর্বস্তরের জনগণের মাঝে সাড়া ফেলছে এ মেলা। ববাংলাদেশে ২০১০ সালে প্রথম বারের মতো এ মেলা আয়োজিত হয়। এরপর শুধুই এগিয়ে চলা।

উৎসব মূখর পরিবেশে মানুষ এক জায়গায় বসে তার সর্বগুরুত্বপূর্ণ নাগরিক দায়িত্ব- রাষ্ট্রের কোষাগারে কর জমা দেয়া এবং নিজের আয়, ব্যয় ও সম্পদের সঠিক হিসেব সরকারের কাছে জমা দেয়ার কাজটি করতে পারেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সসংবিধানের ২০ অনুচ্ছেদের উপ অনুচ্ছেদ ২ মোতাবেক রাষ্ট্র তার সকল নাগরিকের অনুপার্জিত বআয় উপভোগ করতে পারবে না। রাষ্ট্র এই অনুপার্জিত আয় উপভোগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি ও শান্তির বিধান নিশ্চিত   রকরার জন্য আয়কর রিটার্নের মাধ্যমে আইনদ্বারা নির্ধারিত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রগ্রহণ করেছে।

আবার জনগণও যাতে সহজভাবে আমলাতান্ত্রিকতামুক্ত উৎসবমূখর পরিবেশে কর ও রিটার্ন জমা দিতে পারেন সেজন্যই মূলত আয়কর মেলার আয়োজন। কর অঞ্চল-কুমিল্লার একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় মেলার মাধ্যমে তারা কর আদায়ের প্রথাগত কাঠামো ভেঙ্গে কর আহরণ করছেন। আয়কর মেলা হচ্ছে তার প্রাণ ভোমরা।

সহকারী কর কমিশনার, সদর দপ্তর (প্রশাসন) বাপন চন্দ্র দাস জানান তারা কর আহরণ করেন ভ্রমরের মত করে। ভ্রমর যেমন ফুল হতে মধু আহরণ করে কিন্তু ফুলের কোন ক্ষতি হয় না, তেমনি জনগণ হতে তাদের কোন প্রকার ক্ষতি ছাড়াই কর আ আহরণ করতে হয়। আয়কর মেলা সেটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কর অঞ্চল-কুমিল্লা

নিয়মিতভাবেই আয়কর সংস্কৃতির বিকাশ, লালন ও প্রসারের কাজ করছে বলেও জানা যায়। কর অঞ্চল-কুমিল্লার এবারে স্লোগান- ‘কর দেব হেসে, দেশকে ভালবেসে’। কর ভবন, কুমিল্লা প্রাঙ্গণে আয়কর মেলা ১ নভেম্বর হতে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এছাড়াও চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাম উপজেলা ৬ নে নভেম্বর ভ্রাম্যমান মেলা চলবে। আয়কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১ নভেম্বর ২০১৭ খ্রি: তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। মেলার উদ্বোধন করবেন কুমিল্লা-৬ সংসদীয় আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব হাজী আ.ক.ম.বাহাউদ্দিন বাহার। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কুমিল্লা জেলার বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জনাব জেসমিন আরা বেগম, লে. কর্ণেল গাজী মোঃ আহসানুজ্জামান এসপিপি, জি উপ মহাপরিচালক, সেক্টর কমান্ডার, বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর এবং জনাব মো: মা মাহবুবুজ্জামান, কমিশনার, কাস্টমস্ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।

কর অঞ্চল-কুমিল্লার ইটিআইএন ডাটাবেজ www.incometax.gov.bd হতে দেখা যায় এ অঞ্চলে দুই (০২) লক্ষাধিক

নিবন্ধিত করদাতা রয়েছে। তাদের জন্য আয়কর মেলার সুবিধা সমূহ হচ্ছে-

১. ২০১৭-২০১৮ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া ও তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্নের প্রাপ্তিস্বীকারপত্র প্রদান।

২. অনলাইনে ইটিআইএন গ্রহণ।

৩. অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া।

৪. অনলাইনে কর জমা দেয়া (Online payment)|

৫. মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য পৃথক পৃথক বুথ।

৬. মেলায় স্থাপিত সোনালী ও জনতা ব্যাংকের বুথে আয়কর জমা দেয়া যাবে।

৭. মেলা প্রাঙ্গনে আয়কর রিটার্ন ইটিআইএন ফরম এবং চালান ফরম সরবরাহ করা হবে।

৮. করদাতাদের সুবিধার্থে হেল্প ডেক্স, তথ্য কেন্দ্র ও আয়কর অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত বুথ থাকবে। এসব বুথে করদাতাগণ

আয়কর রিটার্ন, ফরম পূরণ, চালান ও পে-অর্ডার প্রস্তুত সহ আয়কর আইন বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাওয়া যাবে।

৯. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েব সাইটে www.incometax.gov.bd এ বিদ্যমান Tax Calculator Software

ব্যবহার করে করদাতাগণ সহজেই আয়কর পরিগণনা করতে পারবেন।

১০. মেলায় শুল্ক ও ভ্যাট পরামর্শ কেন্দ্র, স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র, সঞ্চয় অধিদপ্তরের বুথ থাকবে। এছাড়াও চাইল্ড কর্নার, রিফ্রেশমেন্ট কর্নার হিসেবেও দুটি কর্নার থাকছে।

কর অঞ্চল-কুমিল্লা’র কর কমিশনার, জনাব ড. সামস্ উদ্দিন আহমেদ আয়কর মেলা-২০১৭ এ অংশগ্রহণ করে সকলকে উন্নয়নের গর্বিত অংশীদার হওয়ার উদার্ত আহবান জানান।

আরো পড়ুন