কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসে সেবাগ্রহীতাকে মারধরের পর এবার হুমকি

কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসে তিন সেবাগ্রহীতাকে মারধর করার মামলায় ‘পুলিশের সঙ্গে কথা বলায়’ উপ-পরিচালকের ভাই পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ফল ভালো হবে না বলে হুমকি দেন সাকিবকে। গতকাল সোমবার সেবা গ্রহীতা মোহাম্মদ সাকিবকে এ হুমকি দেয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী সাকিব কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ভাঙ্গারচর গ্রামের বাসিন্দা।

গত ১৮ই এপ্রিল কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) নুরুল হুদার বিরুদ্ধে তিন সেবা গ্রহীতাকে মারধর ও দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ ওঠে।

গত ২৬শে এপ্রিল কুমিল্লার ১ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আব্বাস উদ্দিন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঘটনাটি র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে তদন্তের ভার পড়ে পিবিআই-এর ওপর।

আদালতের দেওয়া আদেশে উল্লেখ করা হয়, ‘চেয়ারে বসায় তিন সেবা গ্রহীতাকে পেটালেন পাসপোর্টের ডিডি’ শিরোনামে গণমাধ্যমের সংবাদ আদালতের গোচরীভূত হয়েছে। এ সংবাদ সত্য হয়ে থাকলে অফিসের ডিডি নুরুল হুদা ফৌজদারী অপরাধ করেছেন।

তাছাড়া সংবাদকর্মী রাকিবুল ইসলাম রানা (ম্যাক )ও সাফিকে সাংবাদিক হিসেবে তাদের দায়িত্বপালনে বাধা দেয়া ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়াও আইনবিরোধী মর্মে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়।

আদালতের নির্দেশে কুমিল্লার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই মারধরের শিকার এক সেবাগ্রহীতা থেকে একাধিকবার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সাক্ষ্য গ্রহণ করে। এরই জেরে ওই সেবাগ্রহীতাকে প্রথমে বিভিন্ন পরিচয়ে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে।

সবশেষ পাসপোর্টের ডিডির ছোট ভাই পরিচয় দানকারীসহ আরও চারজন মোহাম্মদ সাকিবের বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে এর ফল ভালো হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়, বলেন সাকিব।

সাকিব বলেন, গত রোববার বিকালে একটি নম্বর থেকে আমাকে আট থেকে ১০ বার কল করাহয়। কল রিসিভ করলে আমার এলাকার নাম এবং ইউনিয়নের নাম জানতে চাওয়া হয়। পরে আবার ওই নম্বর থেকে কল করায় আমি রিসিভ করিনি।

“সোমবার বেলা ১১টায় একটি প্রাইভেট কারে করে পাঁচজন লোক আমাদের বাড়ি যান। এ সময় আমি কাজে থাকায় আমার মায়ের সঙ্গে প্রথমে ওই পাঁচজন সিআইডি পরিচয়ে কথা বলেন।

সাকিব আরও বলেন, বাড়িতে গিয়ে আমাকে না পেয়ে আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলে যেখানে ইলেক্ট্রিকের কাজ করি সেখানে আসেন তারা।

আসার পর ওনারা আমাকে বলেন, ‘পাসপোর্ট অফিসে কী হয়েছিল?’ তখন আমি আগের কথাগুলো হুবহু বলি।”

“বলার পর উনারা আমাকে এ বিষয়টা নিয়ে আর কাউকে কোনো কিছু বলতে নিষেধ করেন এবং তাদের মধ্যে যেকোনো একজন আমাকে ফোন দিলে আমি যেন কুমিল্লা আদালতে গিয়ে একটি স্বাক্ষর দিয়ে চলে আসি। অন্যথায় আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি হতে হবে।
সাকিব বলেন, এ সময় তাদের একজন নিজেকে কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ডিডি নুরুল হুদার আপন ছোট ভাই পরিচয় দেন ।

বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে এর ফল ভালো হবে না বলেও এ সময় হুমকি দেন ডিডির ভাই পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে ডিডি নুরুল হুদার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরো পড়ুন