কুমিল্লা বুড়িচংয়ে জমে উঠেছে উপজেলা নির্বাচন
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাচনের আর বাকি কয়েক দিন অর্থাৎ ৩১ মার্চ। যতই দিন যাচ্ছে ততই পরিবর্তন হচ্ছে দৃশ্যপট। ক্রমেই জনগণ উন্মোচিত হচ্ছেন কে কার সমর্থক। প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠী দলে ভিরাতে চাইছেন ক্লিন ইমেজের সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের।
৫ম উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে ১৩টির। কিন্তু এর মধ্যে ৫টিতে একক প্রার্থী থাকায় সেখানে নির্বাচন হচ্ছে না। যে সব উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে না, সেগুলো হলো চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, দেবিদ্বার ও চান্দিনা। এই ৫টি উপজেলায় রয়েছে একক প্রার্থী।
অন্য দিকে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। সবচেয়ে প্রতিদন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বুড়িচং, তিতাস, মেঘনা ও বরুড়া উপজেলায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এই সব উপজেলায়। বিএনপি জামায়াত নির্বাচনে না আসায় আ’লীগ প্রার্থী বনাম আ’লীগের বিদ্রোহী। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই বেশ জমে ওঠেছে।
বুড়িচং উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৬ শত ৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ১০ হাজার ১ শত ২৮ জন, মহিলা ১ লক্ষ ৬ হাজার ৫ শত ২৮ জন। কেন্দ্র ৭৪টি, বুথ ৫২১টি।
বুড়িচং উপজেলায় দুই প্রতিদন্ধি প্রার্থী হচ্ছেন আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের এডভোকেট হাশেম খান, আনারস প্রতিকের আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আখলাক হায়দার। চলছে একে একে অপরের বিরুদ্ধে অপ-প্রচার । ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তাদের সমর্থকরা নানা কুৎসা রটাচ্ছেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
তবে ভোটের মাঠে কে এগিয়ে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বুড়িচং উপজেলার বেশির ভাগ আ’লীগ ক্ষমতাবান নেতাকর্মীই নৌকার পক্ষে একাট্টা। কর্মীসভা ও মতবিনিময় সভায় প্রচুর লোক সমাগম উভয় পক্ষের। বিশেষ করে যুবক শ্রেণির লোকজনই বেশি দেখা যায়। সাথে রয়েছে মুরুব্বি শ্রেণির লোকজন। প্রতিদিনই নতুন নেতাকর্মী তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক লোক সমাগম হচ্ছে।
এডভোকেট হাশেম খানের পক্ষে দেখা যায় কুমিল্লার দক্ষিণ জেলার আ’লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও বুড়িচং উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট রেজাউল করিম খোকন,বুড়িচং সদর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ্ আলম, ষোলনল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম, বাকশীমূল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল করিম ঠিকাদার, আ’লীগের যুগ্ম আহব্বায়ক জি এম জাকারিয়া, উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী বিল্লাল হোসেন ঠিকাদার, যুবলীগের নেতা শরিফুল ইসলাম, বুড়িচং উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ জালাল উদ্দিন সহ আরো অনেকে।
অপরদিকে আখলাক হায়দারের পক্ষে দেখা যায় বুড়িচং উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বাছির খাঁন, রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: মোস্তফা, মোকাম ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী, ভারেল্লা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রব, দক্ষিণে শাহ্ কামাল চেয়ারম্যান, পীরযাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাকির হোসেন জাহের, ময়নামতি ইউপি চেয়ারম্যান লালন হায়দার, জেলা পরিষদ সদস্য তারিক হায়দার উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ৮কমান্ডার আহব্বায়ক বিল্লাল হোসেন ঠিকাদার সহ আরো অনেকে।
এ দিকে জাতীয় পার্টি দলের মনোনীত চেয়ারম্যান গোলাম বায়েজীদ’কে প্রচার–প্রচারনা তেমন দেখা যায় না।
প্রচার-প্রচারনায় জমে উঠেছে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে তারা হলেন, মোঃ মতিউর রহমান রুমেল খাঁন(তালা), মতিউর রহমান আলী (চশমা), আলমগীর হোসেন(টিউবওয়েল), মোঃ গোলাম ফারুক(বই), মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন(মাইক), মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন (উড়োজাহাজ)।
মহিলাদের মধ্যে নাদেরা পারভীন আক্তার(প্রজাপতি), পান্না আক্তার(কলস), সালমা আক্তার পারভীন(ফুটবল)।
তারা সবাই আ’লীগের সাথে জড়িত। তারা নিজকে নির্বাচনে জয়ী হতে তাদের প্রচারনা ভিন্ন কৌশলে ভোটাদের মন জয়ের চেষ্টা চলছে।
অপর দিকে সাধারণ জনমত আবার ভিন্ন কথা বলে। সাধারণ মানুষ চায় শান্তি। তারা সন্ত্রাস, মাদক ও অস্ত্রবাজি দেখতে চায় না। তারা চায় ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হোক।
তারা ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়। কিন্তু জন মনে শঙ্কা আদৌ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে কিনা? তারা ভোট দিতে পারবেন কিনা? এমন সন্দেহ করছেন প্রতিনিয়ত।
এখন ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দেখা যাক কি ঘটে বুড়িচংয়ের ভাগ্যাকাশে। কে হবেন বুড়িচং উপজেলার ভবিষ্যৎ নেতা।