কুমিল্লাকে সুরক্ষিত রাখতে এমপি বাহারের সকাল-সন্ধ্যা ছুটে চলা
“আপনারা সবাই ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন। খাদ্য সমস্যা হলে হটলাইনে ফোন করুন,খাদ্য পৌঁছে যাবে আপনার ঘরে। করোনামুক্ত থাকতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। নিজে পরিষ্কার থাকুন, অন্যকে পরিষ্কার থাকতে উৎসাহী করুন। ”
কখনো গাড়ি থেকে নেমে ধমকের স্বরে ,আবার কখনো পায়ে হেঁটে কোমল স্বরে সচেতনতামূলক প্রচারণা,আবার কখনো খাদ্য সহায়তা বিতরণের ফাঁকে এভাবেই কুমিল্লাবাসীকে করোনাভাইরাস মোকবিলার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। শুধু শহরই নয়, করোনা সংকটে নিজ নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে প্রতিদিনই বিনা নোটিশে সকাল-সন্ধ্যা ছুটে চলছেন তিনি। শনিবার বিকালে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সুপারকে সঙ্গে নিয়ে করোনা সচেতনতায় ‘অপ্রয়োজনে’ বাহিরে বের হওয়া মানুষকে ঘরমূখী করতে ঝটিকা অভিযানে নামেন এমপি বাহার।
শনিবার বিকাল ৫ থেকে থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত নগরীর প্রধান সড়ক , আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন, শহরতলীর দূর্গাপুর ( উত্তর) ও দূর্গাপুর( দক্ষিন) ইউনিয়ন, কালিরবাজার ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে করোনা মোকাবেলায় সর্তকতামূলক প্রচারণা করেন এমপি বাহার। পাশাপাশি কর্মহীন মানুষদের হাতে সহায়তার খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে প্রশাসন,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দেন। এসময় কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো.আবুল ফজল মীর, জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মো. নূরুল ইসলাম সহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হাজী বাহার এমপি বলেন, কুমিল্লায় প্রশাসনের সকল লোকজন করোনা সচেতনতায় নিয়োজিত রয়েছেন। ইতিমধ্যে সরকারী নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে তাঁরা। কুমিল্লাবাসীর ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে কুমিল্লাকে করোনামুক্ত রাখতে সকলকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে নিজ দায়িত্ববোধ থেকে চেষ্টা চালাচ্ছি। আপনারা ঘরে থাকুন,আমরা আছি আপনাদের সেবায়। তাই করোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জানা যায়,করোনা ভাইরাস সংক্রমণ (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে। কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া কুমিল্লায় বন্ধ আছে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অফিস-আদালত, গণপরিবহনও বন্ধ। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়ায় নিষেধ থাকলেও অনেকে অমান্য করে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে। নগরীর প্রধান সড়কগুলিতে জনসমাগম কম হলেও অলিগণিতে চলছে অকারণে আড্ডাবাজি। নগরীতে বিশেষ করে অটোরিক্সা ও সিএনজিতে গাদাগাদি করে মানুষ যাতায়াত করছে। এটা কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে গাদাগাদি করে চলাফেরা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে সবাইকে।
অপরদিকে কাজ নেই, তাই বলে ঘরে বসেও থাকছেন না কুমিল্লা গ্রামীণ জনপদের মানুষগুলো। চা-স্টল, দোকানপাটের সামনে দলবেধে আড্ডায় মেতে আছেন তারা। আড্ডার আলচ্য বিষয়ও করোনা। অনেকেই একসঙ্গে বসে দেখছেন টেলিভিশন। যেখানে ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রচার করা হচ্ছে করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরুত্ব বজায় নিশ্চিত করার জন্য। অথচ এগুলো শুনছেনই না গ্রামের কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষেরা।
এসব বিষয় নজরে আসায় কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার গতকাল প্রশাসনকে নিয়ে ঝটিকা টহলে নামেন। করোনা সচেতনতায় সতর্ক করে দেন অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া লোকজনকে। এদিকে কুমিল্লা মহানগরীর বিভিন্ন সড়কে গাদাগাদি করে চলা যাত্রীবাহী বেশ কয়েকটি সিএনজি ও ইজিবাইক আটক করে প্রশাসন। রাত ৮ টার দিকে হাজী বাহার এমপি সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে তাদের শপথ বাক্য পাঠ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে যারা সরকারি খাদ্য সহায়তা পাননি তাদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।