বুড়িচংয়ে দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে জলসে গেছে সবজি বিক্রেতার শরীর
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পরিহল পাড়া গ্রামে শনিবার দিবাগত রাতের আধাঁরে সবজি বিক্রেতা শাহ জাহান (৪৫)কে পিছন থেকে তার বাড়ীর আঙ্গিনায় র্দূবৃত্তরা এসিড ছোড়ে জলসে দিয়েছে শরীর। তার আত্মচিৎকারে আত্মীয় স্বজন সহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ইষ্টার্ন মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। তার অবস্থা অবনতি হলে রাত ১ টায় ঢাকা বঙ্গ বন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। খবর পেয়ে কুমিল্লার সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোহান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় আরো পরিদর্শন করেন এবং সঙ্গে ছিলেন বুড়িচং থানার ওসি মোঃ মোজাম্মেল হক পিপিএম দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুল বারি নয়ন, এস আই ইমরুল হাসান ও এ এস আই সুমন চাকমা সহ সঙ্গীয় ফোর্স। পুলিশ এসিড ছোড়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জুলহাস (৫০)এবং আবদুল হালিম (৪০) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ,আহতের বোন ও স্থানীয় লোকজন জানায় জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের পরিহল পাড়ার মধ্য পাড়া গ্রামের মৃত আঃ খালেকের ছেলে মোঃ শাহ জাহান (৪৫) কাঁচা মাল সবজি বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।বিগত কয়েক বৎসর ধরে একই বাড়ীর মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে জুলহাস (৫০),মৃত রজব আলীর ছেলে মইন(৪৫), আঃ খালেকের ছেলে হালিম (৪০), সায়েদ আলীর ছেলে আঃ মতিন (৬০) তাদের সঙ্গে শাহজাহানের বসত বাড়ীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। শাহজাহানের বোন পারভীন আক্তার জানান তার ভাইকে জমির বিরোধ ধরে উপরে উল্লেখিত ব্যাক্তিরা তাকে বাড়ী ছাড়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকী ধমকী দেয়। এ ঘটনায় কয়েক মাস পূর্বে শাহজাহান বুড়িচং থানায় সাধারন ডায়রী করলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে সে কুমিল্লা কোর্টে একটি মামলা দায়ের করে।
এদিকে শাহজাহানের বোন আরো জানায় সে, তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে আদর্শ সদর উপজেলার ধনুয়া খোলা গ্রামে শ^শুড় বাড়ীতে বসবাস করত। শাহজাহানের বাড়ীতে তার ২ বোন ভাগিনা ভাগনি নিয়ে বসবাস করছে।শাহজাহান মাঝে মধ্যে বাড়িতে এসে বোনদের সঙ্গে থাকত। গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে এগারটায় শাজাহানের বোন পারভীন আক্তার ও পারুল আক্তার তার ভাইয়ের আত্মচিৎকার করে এবং তাদের নাম ধরে ডেকে বাঁচানোর জন্য আকুতি মিনতি করে। এ সময় আশপাশের লোকজন সহ বাড়ীর লোকজন এগিয়ে এসে দেখতে পায় তাদের বাড়ীর পাশে সড়কে লুটিয়ে পড়ে ছটপট করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দেখতে পায় শাহজাহানের পিছন থেকে শরীরে র্দূবৃত্তরা এসিড ছোড়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ইষ্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করে। পরে রাত ১ টার দিকে তার শরীরের অবস্থা অবনতি হলেউন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে।
এদিকে প্রতিপক্ষ জুলহাসের স্ত্রী শাহিদা আক্তার ,হনুফা বেগম,জাহেনারা বেগম ও সুরাইয়া মনির সহ আরো কয়েক জন জানাান বিগত ৩৫ বৎসর পূর্বে শাহ জাহানের মা মৃত ডলি বেগম বাড়ীর জমি জুলহাসের নিকট বিক্রয় করে দেয়।এ জমি নিয়ে শাহজাহান আমাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। গত শনিবার রাতে শাহজাহানের উপর অন্য কেউ চক্রান্ত করে এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আঃ মতিন জুলহাস এবং হালিম ঘটনার সময় পরিহল পাড়া একটি ধর্মীয় মাহফিলে ছিলেন। এদিকে তারা আরো বলেন আমাদের বাড়ীর ছেলেরা দেশের বাহিরে চাকুরি নিয়ে আছেন। ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র এধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়েছে।
এব্যাপারে বুড়িচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক পিপিএম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সবজি বিক্রেতা শাহজাহানের উপর এসিড নিক্ষেপ করে তার শরীর জলসে দেয় ভিকটিম অভিযোগ করে এসিড নিক্ষেপ কারীদের নাম জানিয়ে দেয়। শাহজাহান বর্তমানে ঢাকা বঙ্গ বন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে। এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে ২ জনকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে।