অবৈধ সার্ভারের মাধ্যমে স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল প্রদর্শন
মারুফ আহমেদঃ কুমিল্লায় কালিরবাজার ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামে একটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে Set Top Boxes/DTH/Server এর মাধ্যমে পাইরেসী করে স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল প্রদর্শন করে বিপুল অংকের টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি বন্ধে স্থানীয় ডিশ ব্যবসায়ী ও বিদেশী চ্যানেলগুলোর বৈধ পরিবেশক জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে লিখিত আবেদন করলেও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা অবৈধ পরিবেশনকারী চক্রকে। ফলে যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন বৈধ পরিবেশক ও ক্যাবল অপারেটররা।
বিদেশী বিভিন্ন চ্যানেলের বৈধ পরিবেশক ন্যাশন ওয়াইড মিডিয়া লিমিটেড ও স্থানীয় চ্যানেল ব্যবসায়ীসহ অপারেটরদের সুত্র জানায়,কুমিল্লায় ডিশ ব্যবসা শুরুর পর থেকে কুমিল্লা ক্যাবল ,কুমিল্লা ক্যাবল টিভি ও কে হোসেন পুরো জেলাজুড়ে এ ব্যবসাটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। এলক্ষ্যে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি স্বাপেক্ষ এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন হতে লাইসেন্স ফি পরিশোধপূর্বক ডিষ্ট্রিবিউটর লাইসেন্স গ্রহণ করে Zee গ্রুপ , Sony গ্রুপ ,WB, HBO ইত্যাদি চ্যানেল সমূহের বৈধ পরিবেশক। যা সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লার সর্বত্র ক্যাবল অপারেটরদের মাধ্যমে বৈধভাবে গ্রাহক পর্যায়ে পরিবেশন করে আসছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালিরবাজার এলাকার বল্লভপুর গ্রামের মফিজ মিয়ার পুত্র মোঃ মাসুম বিল্লাহ কালিরবাজার ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামে একটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান চালু করে অবৈধ Set Top Boxes/DTH/Server’র মাধ্যমে পে-চ্যানেল প্রদর্শন শুরু করে। এতে সরকারের বিপুল অংকের রাজস্ব ক্ষতিছাড়াও বৈধ ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের দুর্ভোগ হচ্ছে। এঅবস্থায় ন্যাশন ওয়াইড মিডিয়া লিমিটেড সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করে অবৈধ পাইরেসী করে স্যাটেলাইট পে-চ্যানেল বন্ধ ও এর পরিচালনাকারী মাসুম বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের লিখিত আবেদন করে। এঅবস্থায় গত ১৯ জুল্ইা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের পক্ষে অবৈধ Set Top Boxes/DTH/Server’র ব্যবসা বন্ধে মাসুম বিল্লাহকে লিখিত নির্দেশ দেন সহকারী কমিশনার কানিজ আফরোজ ।
দায়িত্বশীল সুত্র জানায়,ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে কোতয়ালী মডেল থানাধীন ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মাহবুব আলম মাসুম বিল্লাহকে ডেকে এনে অবৈধ পে-চ্যানেল প্রচারনা বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু এরপরও অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়নি। কে হোসেন ক্যাবল নেটওয়ার্কের স্বত্ত্বাধিকারী কামাল হোসেন জানান, অবৈধ ব্যবসায়ী মাসুম বিল্লাহ স্থানীয় কালিরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেকান্দর আলীর নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবসার কথা বললেও চেয়ারম্যান সেটা অস্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন,বিভিন্নস্থানে আমার সংযোগ লাইনগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাসুমের লোকজন। এদিকে ডিশ ব্যবসায়ী ও ক্যাবল অপারেটররা ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গত শুক্রবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কাবিলা এলাকায় কুমিল্লার পদুয়ারবাজার,বরুড়া,ময়নামতি সেনানিবাসসহ পাশ্ববর্তী সাহেবের বাজার,দেবপুর,কংশনগর,নিমসার,চান্দিনা,কোটবাড়ি,বিজয়পুর, লালমাই,ইলিয়টগঞ্জ,দাউদকান্দিসহ জেলার উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিনাংশের অপারেটররা এক প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় তারা জানান,মাসুম বিল্লাহ’র লোকজন প্রকৃত ব্যবসায়ী কে হোসেন’র ক্যাবল অপারেটরদের নানাভাবে হুমকী,সংযোগ বিচ্ছিন্নকরাসহ সংযোগকারীদের কাছ থেকে মাসিক টাকা আনতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানী হচ্ছে। এতে করে ক্যাবল অপারেটরদের কর্মচারীরাও আতঙ্কে রয়েছে। যে কোন মুহুর্তে দু’পক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কাও করছেন ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ীরা। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন,কে হোসেন ক্যাবল’র স্বত্ত্বাধিকারী কামাল হোসেন,ময়নাল হোসেন,দেলোয়ার মেম্বার,ওয়াব মেম্বার,মান্নান মেম্বার,দীন ইসলাম,আব্দুর রহিম,আব্দুল্লাহ,আরিফ হোসেন,মহিউদ্দিন,আমিনুল ইসলাম ,মনিরুল ইসলাম,ফারুক হাসান,জহির উদ্দিন দেলোয়ার,হারুনুর রশিদ,জাহাঙ্গীর হোসেন,মিজানুর রহমান,জহিরুল ইসলাম,শরিফুল ইসলাম,আবু নাসের,মোর্শেদ আলম,সাইফুল ইসলাম,বাশার প্রমূখ।