কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা কমপ্লেক্স হচ্ছে গোমতীর উত্তর পাড়ে
ডেস্ক রিপোর্টঃ গোমতীর পাড়ে আমড়াতলী ইউনিয়নের ছত্রখিল এলাকায় স্থানান্তর হচ্ছে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা ভবন ও বাসা বাড়ি। গোমতী নদীর উত্তর পাড়ে মনোরম পরিবেশে ৬ একর ভুমিতে নতুন সাজে নান্দনিক রূপে নির্মিত হবে কুমিল্লা আদর্শ উপজেলা পরিষদের নতুন কমপ্লেক্স। গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। নিকারের সভায় গোমতীর পাড়ে ছত্রখিল এলাকায় কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সদর দফতর স্থানান্তর প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান হাজী বাহার এমপি।
নিকারের সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার সদর দফতর ছত্রখিলে নিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আদর্শ সদর উপজেলার উপজেলা পরিষদ ভবনাদি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে পড়েছে। এ জন্য এটাকে সিটি কর্পোরেশন থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।’
জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে সদর দক্ষিনে (কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায়) অবস্থিত বর্তমান আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ ভবনকে গোমতী নদীর উত্তরপাড়ে চত্রখিল এলাকায় স্থানান্তরের উদ্যেগ গ্রহণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে এমপি বাহারের ডিও লেটার সহ এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়।
উক্ত প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়,২০০৫ সালে কুমিল্লা সদর উপজেলাকে ভেঙ্গে আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিন নামে দুটি উপজেলা সৃষ্টি হয়। সে সময় উপজেলা পরিষদের সীমান এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় যে আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন সহ উপজেলা কোয়াটার ও বাসাবাড়ি সদর দক্ষিন উপজেলায় ( বর্তমানে কুমিল্লায় সিটি কর্পোরেশন) অন্তরভুক্ত হয়। উপজেলার সদর দপ্তর ও কোয়াটারের প্রায় দেড় কিলোমিটার ব্যবধানে অবস্থিত। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স গোমতির উত্তর পাড়ে আমড়াতলী ইউনিয়নের উজিরপুর মৌজায় চত্রখিলে স্থানান্তরের প্রস্তাব করা হয়। নতুন উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে খতিয়ানভুক্ত ৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এমপি বাহারের প্রবল আগ্রহ ও দিক নির্দেশনা নিয়ে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে বেশ দৌড়-ঝাপ চালান আদর্শ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড.মো.আমিনুল ইসলাম টুটুল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান এড.মো.আমিনুল ইসলাম টুটুল বলেন, ১৪ বছর ধরে আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদ সদর দক্ষিনে অবস্থিত। ভৌগলিক অবস্থানগত সমস্যার পাশাপাশি পুরানো জরার্জীর্ন ভবনে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। অবকাঠামোগত দিক থেকে নতুনভাবে সাজানো যাচ্ছিল না উপজেলা পরিষদ দপ্তর ও বাসাবাড়ি। কুমিল্লাবাসীর অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি’র দৃষ্টিতে বিষয়টি আনা হলে তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জন্য নতুন মনোরম পরিবেশে দৃষ্টি নন্দন একটি উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মানের উদ্যেগ গ্রহণ করেন। এ উদ্যেগ সফল করতে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী-সচিব, জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা আমাদের পর্যাপ্ত সহায়তার করায় ফলে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারনী ফোরামের সভায় তা অনুমোদন প্রদান করায় বঙ্গবন্ধুর সাহসী কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য,গতকাল এই প্রস্তাবসহ মোট ১৫টি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে নিকার। এর মধ্যে একটি নতুন পৌরসভা গঠন (সিলেটের বিশ্বনাথপুর), সাতটি পুলিশি থানা গঠন, বাকিগুলো হচ্ছে পৌরসভা সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব। যে সাতটি পুলিশি থানা গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে সেগুলো হলো−চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, পদ্মা সেতুর উত্তরপারে পদ্মা সেতুর উত্তর থানা, দক্ষিণপারে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ থানা, ঠাকুরগাঁওয়ে ভুল্লী, ভাসানচর, রাঙ্গুনিয়া দক্ষিণ এবং কক্সবাজারের ঈদগাহ। এছাড়া যেসব পৌরসভা সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো−গোপালগঞ্জ, মোংলা, নারায়ণগঞ্জ, কালিয়াকৈর ও কুমিল্লার আদর্শনগর সদর।