কুমিল্লার হাইওয়ে রেস্তোরাঁগুলোতে ‘গলা কাটা’ হচ্ছে যাত্রীদের
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাসের স্টাফরা এই রেস্তোরাঁগুলো ছাড়া অন্য কোথাও যাত্রা বিরতি না করায় বাধ্য হয়ে চড়া মূল্যেই খাবার কিনতে বাধ্য হন যাত্রীরা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার প্রায় ১০৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে শতাধিক হাইওয়ে রেস্তোরাঁ। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে যাত্রীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ রয়েছে।
এর পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও পরিবেশনের অভিযোগও রয়েছে এসব রেস্তোরাঁগুলোর বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময়ে জরিমানা করা হলেও অনিয়ম কমছে না বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
জানা যায়, কুমিল্লার এই হাইওয়ে রেস্তোরাগুলোতে নিয়মিত যাত্রা বিরতি করে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের বিভিন্ন বাস ও অন্যান্য পরিবহনগুলো। দীর্ঘ যাত্রার মাঝে নিজেদের প্রয়োজনগুলো এখানেই সারেন যাত্রীরা। তবে, এই সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য রাখার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার অর্ধেকেরও বেশি হাইওয়ে রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাসমালিক ও চালকদের সাথে চুক্তি থাকে এই রেস্তোরাঁগুলোর। চুক্তি অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির বাস একটি নির্ধারিত রেস্তোরাঁতে যাত্রা বিরতির জন্য থামে। বিনিময়ে বাস চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করে থাকে রেস্তোরাঁগুলো। এর পাশপাশি যাত্রীবাহী কোচের স্টাফদের দেওয়া হয় কমিশন। আর এই কমিশনের টাকা তুলতে চড়া দাম নিয়ে যাত্রীদের “গলা কাটা” হয় রেস্তোরাঁগুলোতে।
যাত্রীদের অভিযোগ, এসব রেস্তোরাঁগুলোতে ৫ টাকা দামের পরাটার মূল্য ধরা হয় ১০ টাকা, এক কাপ চায়ের দাম রাখা হয় ৩০ টাকা। শুধু তাই নয়, রেস্তোরাঁগুলোতে বিভিন্ন জিনিসের অতিরিক্ত মূল্য সম্বলিত তালিকাও টাঙিয়ে রাখা হয় যাতে যাত্রীরা কোনও প্রশ্ন তুলতে না পারেন।
ফেনী থেকে আসা যাত্রী নূর নবী বলেন, “এই রেস্তোরাঁগুলো ছাড়া অন্য কোথাও যাত্রা বিরতি না করায় বাধ্য হয়ে চড়া মূল্যেই খাবার কিনতে বাধ্য হই আমরা। এটা নিয়ে প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন।”
কুমিল্লার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানায়, গত ৩ বছরে বেশি দামে খাবার বিক্রি ও নোংরা পরিবেশের জন্য অর্ধশতাধিক রেস্তোরাঁকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে, এমন রেস্তোরাঁও আছে যেগুলোকে একাধিকবার একই অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে।
কুমিল্লা জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “বেশি দাম রাখার অভিযোগ পেলে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয় অভিযুক্ত রেস্তোরাঁকে। হাইওয়ে রেস্তোরাঁগুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। অভিযোগ আসলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”