দেবীদ্বারে ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ

করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্যসংকট মুহূর্তেও তালিকায় নাম থাকা অনেক হতদরিদ্ররা পাচ্ছে না ১০ টাকা কেজির চাল। সরকারের এ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া যায় কুমিল্লার দেবীদ্বারের রাজামেহার ইউনিয়নে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে।

ওই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে রাজামেহার ইউনিয়নের চাটুলী গ্রামের কামরুল হাসান চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক এবং দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী কামরুল হাসান চৌধুরী জানান- দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মো. কবির হোসেন এলাকার হতদরিদ্রের নাম ব্যবহার করে সরকারের খাদ্যবান্ধন কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছে। ওএমএস ডিলার তাজুল ইসলাম এর সহযোগিতায় তালিকায় অনেক হতদরিদ্রদের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম সঠিকভাবে লিখলেও গ্রামের নাম ভুল লিখে তালিকা করে।

তিনি আরও জানান- করোনাভাইরাস সতর্কতায় নিম্নআয় বা হতদরিদ্র পরিবারগুলো এমনিতেই অসহায় হয়ে পড়েছে। মেম্বার কবির হোসেন অনেক হতদরিদ্রদের নাম তালিকায় দেখিয়ে গত ১৭ এপ্রিল ডিলার থেকে চাল উঠিয়ে আত্মসাৎ করে। তাই গ্রামের অসহায় হতদরিদ্রদের পক্ষে গত ৩০ এপ্রিল কুমিল্লা জেলা প্রশাসক এবং ২৬ এপ্রিল দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

ওই তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা হতদরিদ্র কুলসুম আক্তার। স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দিন মজুর। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে কর্মহীন। চার সন্তান, স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে ৮ সদস্যের পরিবার। খুব অভাব-অনটনে সংসার চলে তার। তিনি জানান, মেম্বারকে যখনই বলি তিনি (ইউপি মেম্বার কবির হোসেন) কখনও বলেন চাল আসেনি, আবার কখনও বলেন শেষ হয়ে গেছে। এমন টালবাহানা করেন। কিন্তু আজ কয়েকদিন যাবৎ জানতে পারি তালিকায় আমার নাম আছে। কিন্তু আমি তো কখনও চাল পায়নি।

তালিকার ৩৯ নম্বরে থাকা গাংচর গ্রামের ছালাউদ্দিন। পেশায় রিক্সা মিস্ত্রি। স্ত্রী-সন্তান সহ ৭ সদস্যের সংসার। সংসারের ঘানি টানতে রীতিমত হিমশীম খাচ্ছেন তিনি। তিনি জানান- মেম্বার কবির হোসেন ১০টাকা কেজির চাল দিবো কইয়্যা আমার কাছ থেইক্কা আইডি কার্ড নিচ্ছে। আর কোন খবর নাই। এই পর্যন্ত চাউল-টাউল কিছুই পাইছি না।

কুলসুম ও ছালাউদ্দিন এর মতো এমন অনেক হতদরিদ্র রয়েছে ওই তালিকায়। তাদের নামে চাল উঠে কিন্তু তারা পায় না

ওএমএস ডিলার তাজুল ইসলাম জানান, তালিকা করেন ইউনিয়ন মেম্বার। আমরা শুধু চাল বিতরণ করি এবং বিতরণকালে মেম্বার নিজে উপস্থিত থেকে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করেন। তার বাইরে আমার কিছু জানা নেই। ওয়ার্ড মেম্বার কবির হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিব হাসান এর সাথে যোগাযোগ করতে সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সূত্রঃ আমাদের সময়

আরো পড়ুন