কুমিল্লায় সিভিল সার্জনসহ ২১ চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টিনে
কুমিল্লায় নতুন করে আরও ৩৭ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৬৭২ জনে। মঙ্গলবার (২৬ মে) নতুন করে করোনায় আরও দুই জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ জনে।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের তিন জন চিকিৎসককে নিয়ে বৈঠক করায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামানসহ জেনারেল (সদর হাসপাতাল) হাসপাতালের ২১ জন চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।
সোমবার (২৫ মে) রাত থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ২০ জন চিকিৎসককে এনে বিশেষ ব্যবস্থায় ওই হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে মোবাল ফোনে এসব তথ্য জানান, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘গত রবিবার দুপুরে হাসপাতালের ডাক্তারদের নিয়ে একটি জরুরি সভা করা হয়। এতে ২০ জন ডাক্তার এবং আরও কয়েকজন কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু রাতে আমরা জানতে পারি যে, বৈঠকে থাকা গাইনি বিভাগের তিন জন চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গাইনি বিভাগসহ প্রতিটি ওয়ার্ড জীবাণুমুক্ত করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘বৈঠকে অংশ নেওয়া ২১ জন ডাক্তার-কর্মচারীসহ আমি বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে আছি।’
এদিকে সদর হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, এই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ বেশি, তাই সোমবার রাত থেকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ২০ জন ডাক্তার এনে বিকল্প ব্যবস্থায় চিকিৎসা ব্যবস্থা সচল রাখার কাজ চলছে।
জেলা সিভিল সার্জনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে নতুন করে আরও ৩৭ করোনায় আক্রান্ত ও দুই জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে মুরাদনগরে আট জন, চান্দিনায় ১৪, বরুড়ায় দুই, লাকসাম পাঁচ, সিটি করপোরেশন এলাকায় চার এবং হোমনা, মেঘনা, দেবিদ্বার ও মেডিক্যাল কলেজে এক জন করে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এ নিয়ে কুমিল্লা জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭২ জনে এবং সুস্থ হয়েছেন ৯৬ জন। নতুন করে চান্দিনায় মান্নান খান এবং দেবিদ্বারের রাজামেহার ইউনিয়নের গাংচর গ্রামের মোর্শেদ আলম (৬৫) নামের ব্যক্তি মারা গেছেন। এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৭ হাজার ৪৫১ জনের নমুনা পাঠানোর পর রিপোর্ট এসেছে ৬ হাজার ৮৩৭ জনের। এদের মধ্যে মোট পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৬৭২ জন।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক মিলু জানান, উপজেলার মহারম গ্রামে মান্নান খান (৭০) নামে এক বক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঈদের দিন রাতে বাড়িতে মারা গেছেন। আগে ওই ব্যক্তি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ায় বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিছুটা সুস্থও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঈদের দিন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। এ নিয়ে এ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মজিবুর রহমান জানান, গত কয়েক দিনে এ হাসপাতালেল ১৭ জন ডাক্তার, নার্স ও প্যাথলজিস্টসহ কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসার অগ্রগতি জানতে ৩/৪ দিন পর তাদের পুনরায় করোনার পরীক্ষা করা হবে।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন