কুমিল্লায় বন্ধ নগর উদ্যান-ধর্মসাগর, রাস্তায় প্রশান্তি খুঁজছেন দর্শনার্থীরা
কুমিল্লাবাসীর বিনোদনের জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম নগর উদ্যান ও ধর্মসাগরপাড়। সেখানে এখন ঝুলছে তালা। এই ব্যস্ত জায়গায় এখন সুনসান নীরবতা। কিন্তু সেই স্মৃতি আর মায়ার টান ক’জনে পারে সামলাতে। ক’জনইবা পারে প্রিয় ধর্মসাগর না দেখে থাকতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মসাগরের আশপাশে মানুষের আনাগোনা। অনেকে বাইরের রাস্তা আর ফুটপাতে তুলছেন ছবি। আবার অনেকে রডের ফাঁক দিয়ে নিজের ক্যামেরায় বন্দি করছেন ধর্মসাগরের নীরবতার দৃশ্য। আবার অনেকে দেয়াল ও ফটক টপকে ভেতরে প্রবেশ করছেন। আড্ডা শেষে আবার একই উপায়ে বেরিয়ে আসছেন। ভেতরে নীরবতা থাকলেও বাইরে যেন এক নতুন নগর উদ্যান।
মো. মিজানুর রহমান, বাড়ি ঝাউতলা। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। প্রতিনিয়তই আসতেন নগর উদ্যানে। কিন্তু করোনা সেই প্রতিদিনকার মুহূর্তগুলোকে এখন স্মৃতি বানিয়ে দিয়েছে। তালা ঝুলে আছে প্রিয় নগর উদ্যানের ফটকে। তবুও অতীত স্মৃতির লোভ এখনো মিজানুর রহমানকে টেনে নিয়ে আসে ধর্মসাগরপাড়ে।
ভেতরে যাওয়া নিষেধ, কিন্তু বাইরে থেকে দেখাত নিষেধ নয়। সেই প্রশ্ন মনে নিয়ে এখনো আসেন পদচারণা রাখতে। নগর উদ্যানের বাইরেই হাঁটেন ১০ বছরের ছেলে রাফসানকে নিয়ে। মাঝে মাঝে নিজের স্ত্রী আর আত্মীয়স্বজনদের নিয়েও আসেন ধর্মসাগর পাড় দেখাতে।
কুমিল্লা সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হৃদয়। থাকেন নগরীর চৌধুরীপাড়ায়। আগে প্রতিনিয়তই আসতেন নগর উদ্যানে আড্ডা দিতে। এখনো আসেন। তবে ভেতরে প্রবেশ না করতে পারলেও বাইরের দেখা করেন বন্ধুদের সাথে। এতেই আনন্দিত তিনি।
স্কুল শিক্ষক আবদুল খালেক বলেন, আগে প্রতিদিন সকালেই আসতাম। মাঝে মাঝে বৃদ্ধ মা-বাবাকেও নিয়ে আসতাম। এখন সবই বন্ধ। তারা এখনো আসতে চায়। কিন্তু কি করে আনি? আগে তো ভেতরে বসার জায়গা ছিল। সেখানে তারা বসতেন। বাইরে তো বসার জায়গা নেই। আমি তো বাইরে হাঁটতে পারি। বাবা-মা’তো আর বাইরে হাঁটতে পারেন না।
ধর্মসাগর পাড়ের ঝালমুড়ি ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, আগে ভেতরে বসতাম। বেচাকেনা ভালোই ছিল। এখন বাইরে বসি। এখনো মোটামুটি ভালোই হয়। গেট বন্ধ থাকলেও এখন বাইরে মানুষ হয়। তবে কম।