কুমিল্লায় রাতের আঁধারে কলেজ পুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা
কুমিল্লায় রাতের আঁধারে পীরযাত্রাপুর জোবেদা খাতুন কলেজ পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে কলেজের শ্রেণিকক্ষ, অফিসকক্ষ, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান কক্ষ, কম্পিউটার কক্ষসহ ১০টি কক্ষের বেঞ্চ, টেবিল, চেয়ার, বোর্ড, শ্রেণিকক্ষে টানানো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
শুক্রবার (১০ মার্চ) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পীরযাত্রাপুর জোবেদা খাতুন কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ভূইয়া।
তিনি জানান, কলেজের সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা ছিল না। ২০১৫ সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কলেজটির উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কলেজটি সুনামের সঙ্গে পাঠদান করে আসছিল। কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা এবং মানবিক বিভাগে মোট ২৭৮ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। শিক্ষক, পিয়নসহ মোট ২২ জন স্টাফ কলেজটিতে কর্মরত রয়েছেন। পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন এক একর জমি দিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেন।
তিনি আরও বলেন, কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ার কথা ছিল। আমরা আবেদন করেছিলাম, পরে আবেদন খারিজ করে দিলে আমরা আপিল করেছি। গত বছর আপিলের শুনানি হয়েছে। বর্তমানে কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ার অনেকটা কাছাকাছি ছিল। গত তিন বছর ধরে একটানা শতভাগ পাসের হারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন, শুক্রবার সকালে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খান ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ এমপি মহোদয়ের কাছে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
এ বিষয়ে জোবেদা খাতুন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বুড়িচং উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের লিডার জহিরুল ইসলাম বলেন, রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট। আগুনে কলেজের আসবাবপত্র এবং কাগজপত্র সব পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের বিষয়ে জানা যায়নি।
বুড়িচং থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, জোবেদা খাতুন কলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রাথমিক তদন্তে যেসব তথ্য পেয়েছি, এখন তা প্রকাশ করতে চাচ্ছি না।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন, ফায়ার সার্ভিস এবং থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। আমি এ বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের পাশে থাকার জন্য সকল সহযোগিতা করতে বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।