বুড়িচংয়ে মাদ্রাসা ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা

কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ছাত্রের রহস্যজক মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা করেছে নিহত জয়নাল আবেদীন জয়ের পরিবার।

গত ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার তিন তলার ছাদ থেকে গলায় ফাঁস অবস্থায় জয়নাল আবেদীন জয় নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ৩ জনকে আসামী করে কুমিল্লা আদালতে মামলা করেন নিহতের পরিবার।

আসামীরা হলেন, মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ রবিউল হাসান (৫০) হাফেজ আমজাদ হোসেন (২৫) হাফেজ হেলাল উদ্দিন (২৪)
নিহত জয়নাল আবেদীন জয় উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। মৃত্যুর আগে পবিত্র কোরআন শরিফের পাঁচ পাড়া হেফজ হয়েছিল তার।

নিহত মাদ্রাসার ছাত্র খাড়াতাইয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

গতকাল সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায় ছাত্র জয়নাল আবেদীন জয়ের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এতো ছোট বাচ্চা ফাঁসির কি বুঝে! অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনায় সে মারা গেছে। সেটাকে আড়াল করতে হুজুররা এ নাটক সাজাইছে। তবে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ এটিকে দুর্ঘটনা বললেও তা মানতে নারাজ নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন ও মা ঝরনা আক্তার।

নিহত জয়নালের ঝুলন্ত লাশ প্রথম দেখা মাদ্রাসার ছাত্র আকবর হোসেন জানায়, আমি ছাদে গিয়ে দেখি জয়নাল ফাঁসি ঝুলে আছে। আমি তার গলা থেকে কাপড়টা খুলে নিচে নামাই। তারপর হুজুরকে খবর দেই। হুজুর এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

নিহতের খালা সালমা আক্তার বলেন, জয়নাল আত্মহত্যা করেনি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তারা টাকা দিয়ে হাসপাতাল, পুলিশ, সাংবাদিক সবাইকে মেনেজ করেছে। তারা যা বলে তাই সবাই বিশ্বাস করে।

নিহতের বাবা আনোয়ার বলেন, আমার ছেলে মারা যাওয়ার আগে চারদিন বাড়িতে আসে নাই। হুজুর যে বক্তব্য দিয়েছে এটা মিথ্যা। তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। মৃত্যুর আসল ঘটনা তারা লুকানোর চেষ্টা করছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যার বিচার চাই।

মাদ্রসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ রবিউল হাসান জানান,ওই দিন সকাল ১০টায় মাদ্রসার সকল শিক্ষার্থীকে খাবার খাওয়ানোর পর সবার সাথে ঘুমাতে যায় জয়নাল আবেদীন জয়। সহপাঠীদের ফাঁকি দিয়ে ছাদে উঠে কাপড় পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। তবে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা আমরা বলতে পারিনি। রিপোর্ট আসলে বলা যাবে সে কিভাবে মারা গেছে।

ঘটনার খবর শুনে বুড়িচং থানার পুলিশ এস আই মিঠুন ও সঙ্গীয় ফোর্স মাদ্রাসায় গিয়ে জয়নাল আবেদীন জয়কে দেখতে না পেরে হাসপাতালে যায়, সেখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ছিলেন।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার আব্দুল লতিফ ও সভাপতি প্রফেসর ড.মুহাম্মদ সোলায়মান জানান,আমরা বিষয়টি শুনে মাদ্রাসায় গিয়ে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষকদের অবেহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপরে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খন্দকার বলেন, তার বাবা এসে থানাতে অপমৃত্যু মামলা করছ। সে মামলা করলে আমি নেবো না কেন? এ বিষয়ে তদন্ত চলছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পরে বিস্তারিত বলা যাবে।

আরো পড়ুন