ভর্তি পরীক্ষায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অভাবনীয় সাফল্য
ডেস্ক রিপোর্টঃ ২০১৭ সালের এইচ.এস.সি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের ফলাফল বিপর্যয় হলেও ভর্তি প্রতিযোগিতায় অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে সরকারি মেডিকেল কলেজে ১৩৮ জন, বুয়েটে ১৯জন, অন্যান্য প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৮ জন এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে সর্বমোট ৭৮২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে।
গতকাল ভিক্টোরিয়া কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার মিলনায়তনে প্রথমবারের মত কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধণা প্রদান করা হয়। রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর বিজিত কুমার ভট্টার্চাযের সভাপতিত্বে ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জুবাইদা নুর খানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: আবু তাহের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. রাজু আহমেদ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর হাবীব আহসান উল্লাহ। বক্তব্য রাখেন-বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরে আলম সিদ্দিকী, কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সচিব এম নাসিমুল ইসলাম হেলাল।
এই সফলতার পিছনের কারণগুলো জানতে চাইলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আহম্মেদ ফাইয়াজ জামান, সুমাইয়া আক্তার, নাদিয়া সুলতানা, তানজুম আক্তার, সাহেদ কামাল, আনোয়ার সাজাদ, আবরার হামীম, হামীদা, স্বর্ণালী ও সমরীতা সহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের সফলতার পিছনে আমাদের শিক্ষকদের ভুমিকা অপরিসীম। সম্মানিত শিক্ষকগন আমাদের ক্লাসের পড়া ক্লাসে শেষ করিয়ে দিতেন। বাসায় পড়ার জন্যেও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। বিশেষ করে প্র্যাকটিকেলি আমাদের শিক্ষার মানকে গুণগত ও উন্নত করতে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করেছেন।
সন্তানের সাফল্যের কথা জানতে চাওয়া হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ প্রাপ্ত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফৌজিয়া রহমান জানান, তার অদম্য অধ্যবসায়, ক্লাসে শিক্ষকদের পাঠদান আর অনুপ্রেরণাই ছিল আমার ছেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কারণ । বাসায় একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আমরাও তাকে সাহস দিয়েছি, যার ফলে সে সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
কলেজ উপাধ্যক্ষ রতন কুমার সাহা বলেন, শিক্ষার্থীদের অধ্যবসায়, শিক্ষকদের ক্লাসে পাঠদান, কলেজ প্রশাসনের সুনিবিড় পর্যবেক্ষণের ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, জীবনের যে অবস্থানেই থাকোনা কেনো দেশ প্রেম যেন তোমাদের মাঝে বিরাজমান থাকে ।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: আবু তাহের বলেন, শিক্ষার্থীদের সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে আমরা একাডেমিকভাবে অনেক গুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলো- শিক্ষার্থীদের ক্লাসে শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, মাসিক পরীক্ষা নেওয়া, একাদশ শ্রেণিতে দুইটি সাময়িক পরীক্ষা পরিবর্তে তিনটি পরীক্ষা নেয়া, কোন পরীক্ষর্থী কোন বিষয়ে উত্তীর্ণ না হলে তার কারন অনুসন্ধান করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া, পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরকে পরবর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ না দেওয়া।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ভিত্তিক মনিটরিং এর মাধ্যমে কোন বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে সেটা কাটিয়ে তোলা। এ সফলতা অর্জিত হওয়ায় কলেজে এখন ডাবল শীফ্ট চালু করা হয়েছে। সকাল নয়টা থেকে একটা পর্যন্ত একাদশ শ্রেণির ক্লাস এবং দুপুর বারোটা থেকে বিকাল বারোটা পর্যন্ত দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভিক্টোরিয়া কলেজের ১১৮ বছরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় অর্জন। এমন সফলতা সম্ভব হয়েছে ভিক্টোরিয়া কলেজের সকল শিক্ষক, অভিভাবক, কলেজ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সহযোগিতায়। যার ফলে আমাদের এমন একটি গৌরবময় ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।