শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করলো যুবলীগ কর্মী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রামে হামলা, হামলার পরিকল্পনা ও হামলার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কফিল উদ্দিন নামের এক যুবলীগ কর্মী। তিনি নিজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় আসামি। পুলিশের খাতায় রয়েছে অস্ত্র, মাদকসহ আরও তিন মামলা।
গত সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার শিকার হয়েছেন দাবি করে মামলা করেন কফিল উদ্দিন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। যুবলীগের কর্মী হয়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তাঁর মামলার বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে। তবে কফিল উদ্দিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন। ছাত্র–জনতা দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি নিজে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। কোনো সুবিধার জন্য মামলা করেননি।
কফিলের করা মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, মজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ, পিবিআইয়ের সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি ওবায়দুল হক, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ মহসীন, জাহিদুল কবির, এসআই বোরহান উদ্দিন, খাজা এনাম এলাহীসহ ২৬ পুলিশ কর্মকর্তা। এ ছাড়া নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম, সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ, ওয়াসিম উদ্দিন, মোবারক আলীকেও আসামি করা হয়।
এজাহার অনুসারে, কফিল মহানগরের নন্দনকানন এলাকার বাসিন্দা। গত ৪ আগস্ট নিউ মার্কেট গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তিনি অংশ নেন। ওই দিন আসামিদের কয়েকজনের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় বাকি আসামিরা গুলি করেন এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এতে বাদী হাতে আঘাত পান। আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
সুস্থ হয়ে সংশ্লিষ্টদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে দেরি হওয়ায় মামলা করতেও তার দেরি হয়, এজাহারে উল্লেখ করেন কফিল।
এজাহার অনুসারে, কফিল বেসরকারি চাকরি করেন। তার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়ন এলাকায়। তার বাবা মৃত জেবেল হোসেন। কোতয়ালী থানার নন্দনকানন এলাকার দুই নম্বর গলিতে তিনি বর্তমানে বসবাস করেন। পুলিশের রেজিস্ট্রারে উল্লেখ রয়েছে, কফিলের মায়ের নাম শাহাজাহান বেগম।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কফিল যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং নিজেকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের ‘বিতর্কিত’ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী পরিচয় দিতেন। বাবরের বাসাও চট্টগ্রামের নন্দনকানন এলাকায়।
কফিল উদ্দিনের পক্ষে আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। কফিল উদ্দিনের সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের যা তথ্য আমরা তা আদালতে দিয়েছি। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।’