ছাত্রদলের শহীদদের তালিকায় তাবলীগ কর্মী
জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৪২ জন নেতাকর্মীর তালিকা প্রকাশ করেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। সম্প্রতি সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এই তালিকায় ৬৯ নম্বরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুমের তথ্য একজন ‘ছাত্রনেতা’ এবং পারিবারিকভাবে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
জানা যায়, আব্দুল কাইয়ুম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক ছিলেন। গত ৫ আগস্ট ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং ৬ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
কাইয়ুমের মৃত্যুর পর তাকে ছাত্রদলের কর্মী বলে দাবি করা হলেও তার পরিবার এবং ঘনিষ্ঠজনেরা এ দাবিকে অস্বীকার করেছেন। শহীদ কাইয়ুমের মা বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। পড়াশোনা, টিউশন আর নামাজ-রোজা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। আমাদের পরিবার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।’
অন্যদিকে, তাবলীগ জামাতের সাথীরা জানিয়েছেন, কাইয়ুম তাবলীগের নিয়মিত একজন কর্মী ছিলেন এবং মাওলানা সাদ কান্ধালভীর অনুসারী ‘সাদপন্থী’ তাবলীগ জামায়াতের সাথে যুক্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে মামুন আবদুল্লাহ নামের এক তাবলীগের সাথী বলেন, আবদুল কাইয়ুম তাবলীগের মেহনত করত, কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না।
তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। তবে মৃত্যুর পর আমরা তথ্য পেয়েছি যে তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। সে জায়গা থেকে হয়ত সেন্ট্রাল পরিবারের সাথে কথা বলেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনায় কাজী শামসুল আরেফীন বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্টদের যে আচরণ আমরা লক্ষ্য করেছি; একাত্তরের চেতনা বিক্রি করে একটি ন্যারেটিভ তৈরি করা এবং সেই ন্যারিটিভ এর উপর ভর করে সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতার আসন অন্যায় ভাবে ধরে রাখা রাখা। ঠিক স্বাধীনতার পরেও অন্য আরেকটি সংগঠন এর ভিতর এরকম একটি চেতনা দেখা যাচ্ছে লাশ রাজনীতি নিয়ে।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তালিকা নিয়ে আমাদের একটি কমিটি ফের কাজ করছে।